নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি কান্ডে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে পুলিশের অভিযোগ দায়েরের দাবি তুলল বামফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি অনিল বিশ্বাস ভবনে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের বৈঠক হয়। সেখানেই দুর্নীতি নিয়ে এসজেডিএ’র বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নেওয়া নেন তারা। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকণ্ডলীর অন্যতম সদস্য অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “এসজেডিএ’তে দুর্নীতির একটি বাস্তব ভিত্তি রয়েছে। একজনকে চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে কারণেই হোক, ঘটনাচক্রে কয়েকজন আধিকারিকের পদাবনতি হয়েছে। এই অবস্থায়, দুর্নীতির দায়িত্ব কেউ এড়াতে পারে না।”
যদিও এসজেডিএ-এর তরফে মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শরদ দ্বিবেদী দাবি কিন্তু দাবি করেছেন, মূলত পদোন্নতির বিধি সংক্রান্ত কারণেই পদাবনতি হয়েছে। মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক বলেন, “পদোন্নতির নির্দিষ্ট বিধি রয়েছে। তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন থাকায় ৩ জন কার্যনির্বাহী বাস্তুকার এবং ৩ জন জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট প্ল্যানারের পদাবনতি হয়েছে।” এসজেডিএ-এর অফিসার-ইঞ্জিনিয়রদের অনেকের দাবি, যে সব দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে হইচই হচ্ছে তার সঙ্গে পদাবনতির সম্পর্ক নেই বোঝাতেই সিইও ওই ব্যাখা দিয়েছেন।
যদিও এসজেডিএ-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোকবাবু মনে করেন, ঘটনা পরম্পরা বলছে সব কিছুর মধ্যে যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জীবেশ সরকার এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেন, “দুর্নীতির অভিযোগে যাঁদের নাম উঠে আসছে, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে পুলিশে এফআইআর করতে হবে।” এতদিন কেন এফআইআর করা হয়নি সে প্রশ্ন তোলেন জীবেশবাবু। তিনি বলেন, “এই দুর্নীতির দায় রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলকে নিতে হবে।”
পাশাপাশি, ডিওয়াইএফআই-এর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ দাবি করেন, নতুন সরকারের আমলে এসজেডিএ’তে ৩০ কোটি টাকার ‘সিভিল ওয়ার্ক’ হয়েছে। ১০০ কোটি টাকার ‘ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্ক’ হয়েছে। সে সব বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে। বস্তুত, ওই ছয় জনের পদাবনতির বিষয়টি মঙ্গলবার বোর্ড মিটিঙের পর জানিয়ে দেন এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পাশাপাশি জোড়াপানি নদী সংস্কার করতে ৯ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ত্রিফলা আলো লাগাতে প্রায় ৫ কোটি টাকা, মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে ৬ কোটি টাকার পাম্প কেনা নিয়েও অভিযোগ উঠেছে বলে শঙ্করবাবুর দাবি। যে সব বাস্তুকাররা ওই সমস্ত বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের একাংশের পদাবনতি হওয়ায় বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে বলে শঙ্করবাবুরা মনে করেন। আজ, শুক্রবার এসজেডিএতে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে বাম যুব সংগঠনগুলি। |