দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারগুলিকে দু’টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল-গম সরবরাহ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুললেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কেন্দ্র অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর দাবি, দু’টাকা কেজি দরে চাল-গম দেওয়ার প্রকল্পে অতিরিক্ত বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। ফলে রাজ্যের দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদের দু’টাকা কেজি দরে চাল-গম দেওয়ার ব্যবস্থাটাই অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। খাদ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেন, “তৃণমূল সরকারকে চাপে রাখতে রাজনৈতিক ছক কষেই গরিবদের জন্য চাল-গমের অতিরিক্ত বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। অথচ এই নিয়ে বিরোধী দলগুলির কোনও হেলদোল নেই!”
জ্যোতিপ্রিয়বাবুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী কে ভি টমাস বলেন, “অন্ত্যোদয় যোজনা যেমন চলছে, তেমনই চলবে। খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশের পরেও বন্ধ হবে না। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারকে যেমন মাসে ৩৫ কেজি চাল বা গম দেওয়া হত, সেটা অব্যাহত থাকবে।” খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই সারা দেশে খাদ্য সুরক্ষা বিল চালু হতে চলেছে। তাই শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, সব রাজ্যেরই বাড়তি বরাদ্দ বন্ধ করেছে কেন্দ্র। খাদ্য দফতরের একাধিক কর্তা জানান, কোনও রাজ্যকেই অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। দারিদ্রসীমার নীচের বাসিন্দাদের জন্য বার্ষিক বরাদ্দে কাটছাঁট হয়নি। কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনায় জানা গিয়েছে, রবিশস্যের ফলন দেখে বাড়তি বরাদ্দের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।
কেন্দ্রের প্রকল্প মেনেই রাজ্যে বিপিএল পরিবারকে দু’টাকা কেজি দরে মাসে ৩৫ কেজি চাল ও গম দেওয়া হচ্ছিল। পরে পরিবার-পিছু চাল-গমের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫৫ কেজি করা হয়েছিল। রাজ্যে অন্ত্যোদয় প্রকল্প এবং বিপিএল তালিকাভুক্ত ৩৪ লক্ষ পরিবার দু’টাকা কেজি দরে চাল-গম পাচ্ছিল। জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, খাদ্যসচিব অনিল বর্মা বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ হিসেবে চার লক্ষ তিন হাজার মেট্রিক টন চাল এবং তিন লক্ষ ২৩ হাজার টন গম চেয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিব সুধীর কুমারকে চিঠি দেন। তিনি লিখেছেন, কেন্দ্র আট বছর ধরে রাজ্যের বিপিএল পরিবারের জন্য অতিরিক্ত চাল-গম বরাদ্দ করে আসছে। এ বার হঠাৎ তা বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় ৩৪ লক্ষ বিপিএল পরিবার সঙ্কটে পড়বে। |