|
|
|
|
চ্যালেঞ্জার মাইন উদ্ধার বান্দোয়ানে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুরুলিয়া |
পুলিশের আশঙ্কাই সত্যি হল। মাওবাদীরা বান্দোয়ানে গতিবিধি বাড়াচ্ছে, এমন খবর পুলিশের কাছে ছিলই। বৃহস্পতিবার সেই বান্দোয়ানেরই ঠরকাদহ জঙ্গল থেকে একাধিক জিলেটিন স্টিক ও চ্যালেঞ্জার মাইন উদ্ধার হওয়ায় তাঁদের সন্দেহই জোরদার হল বলে মনে করছেন পুরুলিয়া জেলা পুলিশের কর্তারা।
সিআইএফ বা ‘কাউন্টার ইন্সার্জেন্সি ফোর্স’-এর ‘স্পেশ্যাল ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’-এর খবরের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে দলমা রেঞ্জ লাগোয়া ঠরকাদহ জঙ্গলে অভিযান চালানো হয়। এই এলাকাটি বান্দোয়ান থানার অন্তর্গত হলেও একেবারে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া। ঘন জঙ্গলের মধ্যে ছোট বড় পাহাড় টিলায় ঘেরা এলাকা। জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “গোপন খবরের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে ৫৭টি জিলেটিন স্টিক ও পাঁচটি চ্যালেঞ্জার মাইন উদ্ধার হয়েছে।” পুলিশ জানায়, এই বিস্ফোরক ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জামগুলি একটি পাথরের খাঁজে মাটির নীচে পোঁতা ছিল। পুলিশ সুপার বলেন, “প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, মাওবাদীরাই এগুলি এখানে পরে ব্যবহার করবে বলে মজুত করে রেখেছিল।” |
|
উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক।—নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সরঞ্জামগুলি খুব বেশি দিনের পুরনো নয়। জিলেটিন স্টিকগুলি বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। চ্যালেঞ্জার মাইন অনেকটা ডিরেকশনাল মাইনের মতো। এর মুখ যেদিকে থাকে, স্প্লিন্টারগুলি কেবল সেদিকেই ছিটকে যায়। অর্থাৎ কোনও নির্দিষ্ট লক্ষবস্তুতে আঘাত হানার জন্যই এই মাইন ব্যবহার করা হয়। এ যাবত জেলায় তিন বার মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মাওবাদীরা পুলিশ বা যৌবাহিনীর উপর আঘাত এনেছে। ২০০৩ সালের ১১ অক্টোবর বান্দোয়ানের কাঁটাগোড়ার জঙ্গলে বান্দোয়ান থানার তৎকালীন ওসি নীলমাধব দাসকে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যা করে মাওবাদীরা। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নিবার্চনের দিন বান্দোয়ানেরই গঙ্গামান্না ও সিরকা গ্রামের মাঝামাঝি বিএসএফের গাড়ি মাইন বিস্ফারণে উড়িয়ে দেয় মাওবাদীরা। তাতে তিন জন জওয়ানের মৃত্যু হয়। ২০১০-এর ২৫ ডিসেম্বর অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ল ডাকাই পাহাড়ে কোবরা জওয়ানদের লক্ষ করে মাইন বিস্ফোরণ ঘটায় মাওবাদীরা। দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়।
শেষের এই বিস্ফোরণে মাওবাদীরা ‘ডিরেকশনাল মাইন’ ব্যবহার করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। নতুন করে এ দিন একাধিক চ্যালেঞ্জার মাইন মেলায় পুলিশ কর্তারা মনে করছেন, বান্দোয়ানে মাওবাদীরা তাদের গতিবিধি বাড়িয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, “আমরা সব দিকই খতিয়ে দেখছি।” |
|
|
|
|
|