|
|
|
|
ক্ষতিপূরণ দাবি শ্রমিকদের |
চুল্লি ফেটে আহতদের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গঙ্গাজলঘাটি |
চুল্লি ফেটে ছিটকে আসা গলিত লোহায় ঝলসে যাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে সন্তোষ মাঝি (৩০) গঙ্গাজলঘাটির রাজারামপুর গ্রাম, তপন ওঝা (৩৬) ওই থানারই মদনপুর এবং বরুণ দাস (২২) আসানসোলের বাসিন্দা। সন্তোষবাবু ও তপনবাবু বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বরুণবাবু দুর্গাপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁরা মারা যান।
বুধবার সকালে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি থানার নিধিরামপুরের একটি ইস্পাতের রড তৈরির কারখানার চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটে। চুল্লি ফেটে গলিত লোহায় ঝলসে যান দশ জন শ্রমিক। ওই ঘটনার এক দিন পরেও কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জখম শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য কোনও রকম সাহায্যের হাত না বাড়ানোয় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে। বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন দগ্ধ শ্রমিক উজ্বল ওঝা বলেন, “চিকিৎসার জন্য দামি দামি ওষুধ কিনতে হচ্ছে। এত খরচ আমাদের মতো গরিবদের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনও সাহায্য করেনি।” গঙ্গাজলঘাটির তৃণমূল বিধায়ক তথা আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি স্বপন বাউরির দাবি, “কারখানার মালিক পক্ষ যোগাযোগই করেনি। আমি নিজে ওঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনও উত্তর পাইনি।”
ঘটনার দিন বিকেলেই কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ করেছিলেন নিধিরামপুরের বাসিন্দাদের একাংশ। তিন জন মারা যাওয়ার পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলা রুজু করা হবে বলে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন।
দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকদের পরিবারের লোকেরা ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি কারখানার কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি করেছেন। দুর্ঘটনায় মৃত সন্তোষের দাদা পরিতোষ মাঝি বলেন, “ভাইয়ের দুটো ছোট ছেলেমেয়ে আছে। এখন ওদের কে দেখবে? কারখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ওদের সংসারটাই ভেসে গেল।” মৃত তপনবাবুর ভাইপো প্রদীপ ওঝার কথায়, “দশ বছরের ছেলে আছে কাকুর। কারখানায় চাকরি করেই সংসার চালাত। এখন ওদের কে দেখবে, জানি না।”
শ্রমিকদের দাবি, ঘটনার দিন কারখানার কর্ণধার এস সারোগিয়া আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁর মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএস করা হলেও জবাব মেলেনি। গঙ্গাজলঘাটির বিডিও উর্মি দে বিশ্বাস বলেন, “ফ্যাক্টরি ইন্সপেক্টরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। তা এখনও পাইনি। মালিক পক্ষের সঙ্গে আমরাও যোগাযোগের চেষ্টা করছি।” দুর্ঘটনার পর থেকেই কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে রয়েছে। |
|
|
|
|
|