পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নিয়ে লড়াই চলছে হাইকোর্টে। তবে তার আগে পুরুলিয়া জেলায় বড় ধাক্কা খেল কংগ্রেস। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ (বিরোধী দলনেতা), কংগ্রেসের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ দিলেন তৃণমূলে। বৃহস্পতিবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে উত্তমবাবুর পাশাপাশি তৃণমূলে যোগ দেন পুরুলিয়ার আরও কয়েক জন কংগ্রেস নেতা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জেলা কংগ্রেস নেতা শক্তিপদ মাহাতো ও পুরুলিয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির দুই সদস্য নাগেশ্বর গোপ ও মালতী মাহাতো।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায় জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোকে সঙ্গে নিয়ে ওই কংগ্রেস ত্যাগী নেতাদের নিয়ে এ দিন বিকেলে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সাংবাদিকদের কাছে মুকুলবাবু দাবি করেন, “পুরুলিয়া জেলা পরিষদে কংগ্রেসের ৫ জন সদস্য ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আগেই দু’জন তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। এ বার উত্তমবাবুর আমাদের দলে আসায়, কংগ্রেস নয়, তৃণমূলই পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বিরোধী দল হয়ে গেল।” যদিও মুকুলবাবুর দাবিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন পুরুলিয়ার জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক নেপাল মাহাতো। তাঁর দাবি, “জেলা পরিষদের সদস্য ঝালদার মহেশ্বরী মাঝি আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গেলেও পরে লিফলেট ছড়িয়ে ফের তিনি আমাদের দলে ফিরে এসেছেন। কংগ্রেস ছেড়েছিলেন জয়পুরের বুলুরানি মাহাতোও। তিনিও তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন। এ বার উত্তমবাবু আমাদের দলের হয়ে জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ থেকে মেয়াদ ফুরোনোর মুখে তৃণমূলে গেলেন। তাতে অবশ্য আমাদের কোনও ক্ষতি হবে না।” তবে চেষ্টা করেও উত্তমবাবুর সঙ্গে ফোনে কথা বলা যায়নি। মুকুলবাবু জানান, এ দিন উত্তমবাবুর সঙ্গে লাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হরেরাম গোপ-সহ সাত জন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
গত বিধানসভা ভোটে পুরুলিয়ার জয়পুর বিধানসভা কেন্দ্রের আসনটি তৃণমূলকে ছেড়ে দেয় কংগ্রেস। ফলে দলের টিকিট না পেয়ে ওই কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হন শক্তিপদ মাহাতো। তিনি কিছু দিন আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূল ভবনে এসে দলে যোগ দেন। মুকুলবাবু বলেন, “উনি গত বিধানসভা ভোটে ৫২ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। উনি এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ওই নেতারা আমাদের দলে আসায় পুরুলিয়া আমাদের দল শক্তিশালী হল।” শক্তিপদবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নের কাজ করছেন। তাঁর হাত আরও শক্ত করা দরকার আমাদের জেলার উন্নয়নের স্বার্থেই। তাই তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়া জেলায় তৃণমূল ব্যাপক সাফল্য পাবে।” তবে নেপালবাবু তা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, “ওই জেলায় কংগ্রেসের ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। অনেক গভীর পর্যন্ত কংগ্রেসের শিকড় বিস্তৃত। কাজেই দল ভাঙানোর রাজনীতিতে অভ্যস্ত তৃণমূল বিশেষ সুবিধা করতে পারবে না।” |