ইডেনে কেকেআর ম্যাচের মধ্যেই অভিনব নজির |
বাঙালি বলবয়কে টিপস দিলেন ক্রিকেটের মারিও |
দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় • কলকাতা |
দুই মারিওই কাসুন্দিয়ার বঙ্গসন্তানের স্বপ্নের নায়ক। এক মারিও ফুটবলের। অন্য জন ক্রিকেটের।
রাত জেগে টিভিতে ফুটবলের মারিওর (মারিও বালোতেলি) খেলা দেখতে ভুল হয় না তার। কিন্তু ক্রিকেটের মারিও?
|
অর্পণ দে। |
বুধবার রাতে ক্রিকেটের নন্দনকাননে প্রথম সাক্ষাতেই যে তার কাছে স্পিন খেলার টিপস চেয়ে বসলেন! তাও চুপিচুপি নয়। রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে ক্রিকেটের মারিও (অস্ট্রেলিয়া ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের কাছে এই নামেই পরিচিত) ডেভিড ওয়ার্নার গোটা বিশ্বকে টুইটারে জানিয়েও দিয়েছেন সে কথা। আর তাতেই ঘোর কাটছে না ৯/১৫ কাসুন্দিয়া সেকেন্ড বাই লেনের অর্পণ দে-র।
শহর ছাড়ার আগে এ দিন যাকে নিয়ে টুইটারে ওয়ার্নারের ছবি-সহ পোস্ট, “বাচ্চা ছেলেটা জানতে চাইছিল কী ভাবে ছক্কা মারবে। ওর দুঃখ হাতের পেশি জোরদার নয়। ওকে বললাম, একদম সোজা খেলো। ছক্কা নিজের থেকেই তোমার ব্যাটে আসবে।” পরের টুইটেই সাঁতরাগাছির কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রকে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ওপেনারের রসিকতা, “শান্ত, মিষ্টি একটা বাচ্চা। আমিও ওর কাছে জেনে নিয়েছি কী ভাবে স্পিন খেলতে হবে। হাঃ হাঃ হাঃ।”কে এই অর্পণ? আর তাকে নিয়ে মারকুটে অস্ট্রেলীয় ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার কেনই বা টুইট করতে গেলেন?
বাংলা অনূর্ধ্ব-১৪ দলের এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান এ দিন আনন্দাবাজারের কাছে নিজেই ফাঁস করলেন সে কথা। বুধবার কেকেআর-দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ম্যাচে বলবয়ের দায়িত্ব পেয়েছিল বছর বারোর প্রতিশ্রুতিমান ক্রিকেটার। নাইটদের ব্যাটিংয়ের ১৭তম ওভার চলছে তখন। লং অনে বাউন্ডারি লাইনের ধার ঘেঁসে ফিল্ডিং করছিলেন ওয়ার্নার। তখনই বিদেশি ক্রিকেটারের কাছে অটোগ্রাফের খাতা বাড়িয়ে দিয়েছিল অর্পণ।
এর পর দু’জনের কথোপকথন এ রকম:
ওয়ার্নার: জল দেবে?
অর্পণ: এই নিন স্যর।
ওয়ার্নার: ক্রিকেট খেল? তোমার ব্যাটিং টিপস লাগবে? আমার মতো ছক্কা মারতে চাও?
অর্পণ: কী ভাবে মারব? আপনার মতো আমার হাতে পেশি কোথায়?
ওয়ার্নার: (হাসতে হাসতে) আপাতত কভার ড্রাইভটা শিখে নাও। ব্যাট যেন সোজা থাকে। চোখ যেন বল থেকে সরে না যায়। পা কিন্তু বলের লাইনে থাকবে সব সময়।
অর্পণ: থ্যাঙ্ক ইউ স্যর।
ওয়ার্নার: এ বার আমাকে স্পিন খেলার টিপস দাও। (বলেই হাসতে হাসতে ফিল্ডিংয়ের জায়গা পরিবর্তন ওয়ার্নারের)। |
এ দিন আনন্দবাজারের কাছে তাকে নিয়ে ওয়ার্নারের টুইট করার খবর পেয়ে ছোট্ট অর্পণের বিস্ময়, “বাবা! টুইটারেও লিখে দিয়েছে।” তার পরেই খুদে ক্রিকেটারের ধন্যবাদজ্ঞাপন, “সুযোগটা সিএবি-র বুড়ো কাকু আমাকে দিয়েছিলেন। তাই সবার আগে তাঁকে ধন্যাবাদ দিচ্ছি।” আর অর্পণের সেই ‘বুড়ো কাকু’ শঙ্করনাথ বাগচী বলছেন, “ওয়ার্নারের টিপস পেয়ে খুব খুশি হয়েছে ও।” অর্পণের প্রিয় ক্রিকেটারও সাতাশি বিশ্বকাপে ভারত-ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে ওয়াংখেড়েতে তাঁর প্রিয় ক্রিকেটার সুনীল গাওস্করের কাছ থেকে টিপস পেয়েছিলেনসচিন তেন্ডুলকর। সে কথা মনে করাতেই অর্পণের চটপট উত্তর, “সচিনের মতো অত সাংঘাতিক কিছু নয়। বড় ক্রিকেটারের টিপস কাজে লাগিয়ে আমি আমার মতোই খেলতে চাই।’’ |