নাইট সংসারে ১২ মে-র পর সাকিব |
‘নারিনকে খেলার লোক এ বারও দেখছি না’ |
রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় • কলকাতা |
মাঠে কেকেআরের জার্সিতে নয়, মাঠের বাইরে টিভিতে দেখতে হয়েছে ম্যাচ। কী করবেন, বাংলাদেশ বোর্ডের নির্দেশে আইপিএলে এ বার কেকেআরের হয়ে অধিকাংশ ম্যাচে খেলা হচ্ছে না বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের। আসছেন ১২ মে-র পর। এবং নাইটদের উদ্বোধনী ম্যাচে জয়, সুনীল নারিন, সব নিয়ে ঢাকা থেকে ফোনে খোলাখুলি কথা বললেন বাঙালি নাইট সাকিব-আল-হাসান....
প্রশ্ন: আইপিএল সিক্সে কেকেআরের প্রথম ম্যাচ দেখলেন?
সাকিব: দেখব না কেন? কাল রাতে বাড়িতে কয়েক জন বন্ধুবান্ধব এসেছিল। ওদের নিয়েই বসে দেখলাম। খাওয়া-দাওয়াও হল।
প্র: এত দিন প্রথম ম্যাচ মানে ছিল, কেকেআরের শক্ত গাঁট। আইপিএল ফাইভেও প্রথম ম্যাচ হারতে হয়েছে। এ বার সেই ‘হার্ডল’-টাও পেরোনো গেল। এ বার কেকেআর কত দূর যাবে বলে আপনার মনে হচ্ছে?
সাকিব: মন তো বলছে আবার ফাইনাল হবে। আর প্রথম ম্যাচে যা খেললাম, সেই পারফম্যান্স যদি ধরে রাখা যায় চ্যাম্পিয়ন না হওয়ার কোনও কারণ নেই। একটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন? আমাদের মোমেন্টামটা কিন্তু নষ্ট হয়নি। দেখে মনে হয়নি, টিমটা এক বছর পর আবার একসঙ্গে খেলছে। বরং মনে হল, ফাইনাল জেতার এক সপ্তাহ পর আবার নেমেছে কেকেআর।
প্র: কেকেআর পরপর দু’বার চ্যাম্পিয়ন হবে বলছেন?
সাকিব: কেন নয়? টুর্নামেন্ট শুরুর আগে লোকে বলছিল চ্যাম্পিয়নের প্রেশার থাকবে কেকেআরের উপর। গুটিয়ে যাবে। কিন্তু আদতে দেখলাম তো উল্টো। চাপ কোথায়, উল্টে কনফিডেন্সটাই দশগুণ বেড়ে গিয়েছে। প্লে অফ পর্যন্ত না যাওয়ার কোনও কারণ দেখছি না। আর প্লে অফে উঠে গেলে চ্যাম্পিয়ন হব না, কে বলতে পারে?
প্র: কিন্তু আপনার টিম তো বিদেশি নিয়ে ভাল রকম সমস্যা পড়ে গেল। আপনি নেই। জেমস প্যাটিনসন চোট পেয়ে ছিটকে গেলেন। ব্রেন্ডন ম্যাকালামও কবে আসবেন, ঠিক নেই। সামলানো যাবে?
সাকিব: যাবে। সব ফ্র্যাঞ্চাইজিতেই কেউ না কেউ চোট পায়। কারও ন্যাশনাল কমিটমেন্ট থাকে। আর আমি, ব্রেন্ডন, প্যাটিনসন থাকলেই যে দুর্ধর্ষ কিছু একটা হত, কী ভাবে ধরে নিচ্ছেন? যারা আছে, তারাও যথেষ্ট যোগ্য।
প্র: ব্যক্তিগত ভাবে আপনার নিজের খারাপ লাগছে না? কেকেআর ইডেনে খেলছে আর আপনি নেই। যেখানে গত দু’বছর আপনিই ছিলেন নাইটদের এক নম্বর অলরাউন্ডার। আর এ বার আপনার যা শিডিউল, ইডেনে তো নামাই হবে না!
সাকিব: মিথ্যে বলব না, অসম্ভব কষ্ট হচ্ছে। দু’বছর ধরে কেকেআর খেলে বুঝেছি, ইডেনের আবেগ কী বস্তু। মাঠে নামলে ওই চিৎকারই তো চার্জ করে দিত। আর আমি তো মোটামুটি কলকাতারই ছেলে হয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের ভাষা এক। সংস্কৃতি এক। সেখানে কেকেআর খেলছে, আর আমি নেই বিশ্বাস হচ্ছে না। তবে কিছু করারও নেই। দেশ সব সময় আগে, ক্লাব পরে। জিম্বাবোয়ে সফর আছে, যেতে হবে। তবে কেকেআরকেও ভুলব না।
প্র: নাইট সংসারে তা হলে আসবেন কবে?
সাকিব: ১২ মে-র পর। তার পর যে ক’টা ম্যাচ থাকবে, তাতে থাকব। আর ইডেনে নামব না, সেটাও বলা যায় না। কে বলতে পারে, ফাইনলাটাই হয়তো খেললাম!
প্র: গত বার নববর্ষে কলকাতায় ছিলেন। পান্তা ভাত খুঁজেছিলেন শোনা যায়। এ বার মেনুতে কী?
সাকিব: (হেসে) হ্যাঁ, পান্তা ভাত আমার অসম্ভব প্রিয়। তবে এ বারও বোধহয় দেশে থাকা হবে না। ১৭ এপ্রিল থেকে প্রথম ম্যাচ। তত দিনে জিম্বাবোয়ে চলে যাব। মেনুতে প্র্যাক্টিস আর কেকেআর থাকবে। যেখানেই থাকি কেকেআর ম্যাচ মাস্ট। ওই দিন তো ইডেনে সানরাইজার্স ম্যাচ।
প্র: সুনীল নারিনকে কেমন লাগল?
সাকিব: নারিন এক বছর আগে যতটা ভয়ঙ্কর ছিল, এখনও তাই। এ বারও ওকে খেলে দেওয়ার মতো লোক দেখছি না।
প্র: কিন্তু গত এক বছর তো নারিনের মোটেই ভাল যায়নি। শুধু আইপিএলেই ওকে এত ভয়ঙ্কর লাগে কেন? ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিম থেকে তো বাদও পড়তে হয়েছে।
সাকিব: জানি। কিন্তু টেস্টে নারিন এক জিনিস, ওয়ান ডে বা টি টোয়েন্টিতে আর এক। টেস্টে ওর বিরুদ্ধে সেট হতে আপনি সময় পাবেন। টি-টোয়েন্টিতে পাবেন না। হাতে প্রচুর ভ্যারিয়েশন, ব্যাটসম্যানের মনঃস্তত্ত্বটাও খুব ভাল বোঝে। জানে যে ওকে ব্যাটসম্যান ভয় পায়। কারণ ওর গ্রিপ দেখে বোঝা যায় না, বলটা কী হবে? নেটে আমাদেরও ওকে খেলতে সমস্যা হত। |