‘হাফ পেটি লাগা দিজিয়ে’, ফোনে শুনলেন কমিশনার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বুধবার সন্ধ্যায় থানায় বসে আইপিএল বেটিং কান্ডে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার। সে সময়ই বেজে উঠে বুকি’র কাছ বাজেয়াপ্ত করা একটি ফোন। কমিশনার নিজেই ফোন ধরেন। অপর প্রান্তের ব্যক্তি বলেন, “হাফ পেটি লাগা দিজিয়ে’। কমিশনার নাম, ঠিকানা জিজ্ঞেস করতেই ফোন কেটে দেয় ওই ব্যক্তি। পরে কয়েক বার পাল্টা ফোন করলেও তা রিসিভ করা হয়নি। ওই নম্বরের সূত্র ধরেই ছয় নম্বর আইপিএল বেটিং কাণ্ডে আরও কারা যুক্ত রয়েছেন তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরছে, কলকাতার একটি মোবাইল নম্বর থেকে ওই ফোন করা হয়।
শুধু ওই ফোনটিই নয়, সারাদিনে ওই ১০টি সেলফোনে ৩০টির উপরে ‘কল’ পান কমিশনার। প্রত্যেকটি ফোনেই কেউ কলকাতা নাইট রাইডার্স আবার কেউ দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের পক্ষে দর দেন। তদন্তকারী অফিসাররা জানান, যে ফোনগুলো পাওয়া গিয়েছে, তাতে প্রত্যেকেই ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকার কথা বলেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই বুকিও স্বীকার করেছে, তাদের নূন্যতম দর ৫০ হাজার থেকেই শুরু হয়। পুরো আইপিএল মরসুমে ৫০ কোটি টাকার উপরে ব্যবসার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তারা। বৃহস্পতিবার ওই কাণ্ডে ধৃত প্রধান বুকি রবি সিংহ মঙ্গদ, রিন্টু পাল এবং অনিল মাসকারেকে শিলিগুড়ি এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক মধুমিতা বসু তাদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১৮ এপ্রিল ফের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। সেলফোন-সহ যে সব জিনিস বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদও চলছে। ওই ঘটনায় আরও যুক্ত রয়েছেন তাদের গ্রেফতার করা হবে।” কলকাতা পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলেছে শিলিগুড়ি পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ অফিসারেরা জানতে পেরেছেন, আইপিএল-এর পুরো সময়টা দাগাপুরে অনিল মাসকারের ফ্ল্যাটে বসে বেটিং চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল ওই বুকি। বেশিরভাগ পেমেন্ট নগদ টাকায় হওয়ার কথা ছিল। কিছু ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও তা করার ছক কষা হয়। তদন্তকারী অফিসারদের সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন দলকে কি দর দেওয়া হচ্ছে তা মোবাইল ফোনে আপলোড করা ছিল। সেই দর মাঝে মধ্যে ওঠানামা করছিল। সেই দর জুয়াড়িদের কাছে পৌঁছনোর জন্য নেটের সাহায্য নেয় ওই বুকি। পুলিশের দাবি, কলকাতায় বসে বেটিং চালানোর ক্ষেত্রে সহজেই পুলিশের নজরে পড়ার ঝুঁকি থাকায় শিলিগুড়িকে বেছে নেয় ওই বুকি। |