|
|
|
|
মুখ বেঁধে ছিনতাই, ধৃত পাশের বাড়ির ছেলেটিই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
প্রেমে পড়ে ছিনতাইয়ে জড়াল কলেজ ছাত্র!
বাড়িতে ঢুকে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার। দিনদুপুরে শিলচর থানার আর আর সোম রোডে কলেজ শিক্ষক দীপক সোমের বাড়িতে ঢোকে এক যুবক। মুখে কালো কাপড় বাঁধা। গৃহকর্ত্রী অনামিকা তখন বাড়িতে একা। আচমকা সে পিছন থেকে তাঁর মুখ চেপে ধরে। টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় শোওয়ার ঘরে। মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে হাত-পা বেঁধে আলমারি খুলে ছিনিয়ে নেয় নয় হাজার টাকা ও বেশ কিছু গয়না।
দিনদুপুরে কে হতে পারে এই যুবক, তদন্তে নেমে পুলিশ গলদঘর্ম। কিন্তু কোনও সূত্র নেই। কারণ তাকে দেখতে পেয়েছে শুধু দু’জন। অনামিকা আর পাশের বাড়ির ছেলে, শুভম। ছোটবেলা থেকে শুভম সব সময় দীপকবাবুর বাড়িতেই পড়ে থাকে। স্কুল কী কলেজ, তার পড়াশোনার দিকটা প্রতিবেশী কলেজ শিক্ষকই দেখেন। তার উপর এতটাই আস্থা দীপকবাবুর যে টাকা তুলে আনার জন্য এটিএম কার্ড দিয়ে পিন কোডও বলে দিয়েছেন ক’বার।
শুভমই সে দিন বেলা এগারোটা নাগাদ অনামিকাকে এসে জিজ্ঞাসা করে, মুখে কাপড় বাঁধা কোনও যুবক বাড়িতে ঢুকেছে কি না। সে নাকি এমনই একজনকে দেখতে পেয়েছে। দু’জনে মিলে সারা বাড়ি তন্নতন্ন করে খোঁজে। কিন্তু কোথায় কে! শুভম চলে যায়। অনামিকা ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছিলেন। তখনই পিছন থেকে মুখ জাপটে ধরে মুখে কাপড় বাঁধা এক যুবক। কেমন সে যুবক? কত উচ্চতা, দেখতে কেমন, মোটা না রোগা, ফর্সা না শ্যামবর্ণপুলিশি প্রশ্নের মুখে এর উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই অনামিকার চোখে ভেসে ওঠে সেই হাতটি। অনামিকা জানান, ব্রেসলেট পরা ছিল। আর শুভমকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেই ব্রেসলেটই বারবার নজরে আসে পুলিশ অফিসারদের। চেপে ধরলেন সবাই। ওসি এস সি শর্মা, টাউন দারোগা মুকুট কাকতি, মামলার তদন্তকারী অফিসার সঞ্জয় বুঢ়াগোঁহাই। শেষ পর্যন্ত জেরার মুখে ভেঙে গেল শুভমের সব প্রতিরোধ। স্বীকার করল, প্রেমে পড়েছে বেশ ক’দিন। বন্ধুদের অনেকেই প্রেমিকাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যায়, এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায়। তাঁর বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত। চিকিৎসায় বহু টাকা খরচ হয়ে যায় বলে হাত খরচ মেলে না। তাই দীপকবাবুর বাড়িতে ছিনতাইয়ের এই পরিকল্পনা। মুখ বেঁধে নিলে কেউ চিনবে না, এটাই ছিল তার বিশ্বাস।
পুলিশ পরে শুভমের কথামতো ছিনতাই হওয়া গয়নাও উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয়েছে গৌরব পাল নামে আরও এক কলেজ ছাত্রকে। সে অবশ্য সরাসরি ঘটনায় জড়িত নয়। শুভম ‘অপারেশন’ সেরে গৌরবকে ডেকে আনে। তার হাতেই তুলে দিয়েছিল দীপকবাবুর বাড়ি থেকে হাতিয়ে আনা জিনিসপত্র। |
|
|
|
|
|