|
|
|
|
ঝুলে নেই কোনও আর্জি, ক্ষমা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতির |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
ঝুলে থাকা সাতটি ক্ষমাভিক্ষার আর্জির সবগুলিরই নিষ্পত্তি করে ফেললেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাইয়ের পাঁচটি আর্জি নামঞ্জুর করেছেন তিনি। দু’টি ক্ষেত্রে শাস্তি কমে হয়েছে যাবজ্জীবন। যাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে নিহত চন্দনদস্যু বীরাপ্পনের চার সঙ্গী।
সুপ্রিম কোর্টে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল থাকলে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাভিক্ষার আর্জি জানাতে পারে আসামিরা। কিন্তু কখনও সরকারি লালফিতের ফাঁসে, কখনও রাজনীতির খেলায় ঝুলে থাকে ওই আর্জির নিষ্পত্তি করার বিষয়টি। ফাঁসির আসামির সেলে বন্দি কয়েদি ও তার পরিবারের উপরে এই দীর্ঘ প্রতীক্ষা মানসিক অত্যাচারের সামিল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেরির জন্য মৃত্যুদণ্ড মকুবের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল বীরাপ্পনের চার সঙ্গী-সহ কয়েক জন আসামি। আজ অন্য কয়েক জনের সঙ্গে সেই চার জনেরই মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আর্জি খারিজ করেছেন প্রণববাবু। তবে দেরির কারণে মৃত্যুদণ্ড মকুবের মামলা সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে থাকায় বীরাপ্পন সঙ্গীদের নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে আরও সময় লাগবে।
জঙ্গি আফজল গুরুর ক্ষমাভিক্ষার আর্জি দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকায় বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল ইউপিএ সরকারকে। প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়ার পরেই দ্রুত আর্জিগুলির নিষ্পত্তি হতে থাকে। ফাঁসিতে ঝোলানো হয় আফজল ও মুম্বই হামলায় অংশগ্রহণকারী আজমল কসাবকে। সরকারি সূত্রে খবর, বিষয়গুলি ঝুলিয়ে রেখে সরকারকে আর বিপাকে ফেলতে চাননি প্রণববাবু। বরং অনেক ক্ষেত্রে যখন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তহীনতার অভিযোগ উঠছে, তখন এই ক্ষেত্রে তাঁর তরফে দৃঢ়তার পরিচয় দিতে চেয়েছেন তিনি।
এখন প্রণববাবু যে সব আসামি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিলেন তাদের অনেকের ইতিহাসও উল্লেখযোগ্য। ১৯৯৩ সালে কর্নাটকের ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ২২ জন পুলিশ নিহত হন। সেই অপরাধেই মৃত্যুদণ্ড হল বীরাপ্পনের ভাই জ্ঞানপ্রকাশ ও তার দলের সদস্য সাইমন, মিসেকার মাদাইয়া ও বিলাভেদ্রনের।
যাদের ক্ষমাভিক্ষার আর্জি খারিজ হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে হরিয়ানার বাসিন্দা ধর্মপালও। ১৯৯১ সালে হরিয়ানায় একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে সে। বিচারে ১০ বছরের কারাদণ্ড হয় ধর্মপালের। মাঝে শর্তাধীন মুক্তি (প্যারোল) পেয়ে জেল থেকে বেরিয়েই ধর্ষিতার পরিবারের সব সদস্যকে খুন করে সে। এ কাজে ধর্মপালকে সাহায্য করেছিল তার ভাই নির্মলও।
নিম্ন আদালতের বিচারে ধর্মপাল ও নির্মলের মৃত্যুদণ্ড হয়। সুপ্রিম কোর্টে ধর্মপালের শাস্তি বহাল থাকে। নির্মলের ভাগ্যে জোটে যাবজ্জীবন। পরে এর বার শর্তাধীন মুক্তির শর্ত ভেঙে পালিয়েও যায় ধর্মপাল। তাকে পরে ফের গ্রেফতার করা হয়।
রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের পরে এ বার ধর্মপালের ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে হরিয়ানা সরকারকে। হরিয়ানার রোহতক জেলে রয়েছে সে। অম্বালা ও হিসার ছাড়া রাজ্যের অন্য কোনও জেলে ফাঁসি দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। নেই দক্ষ ফাঁসুড়েও। তবে ওই কাজের জন্য যে কোনও উপযুক্ত ব্যক্তিকেই নিয়োগ করতে পারেন জেল সুপার।
দীর্ঘ দিন পরে রাষ্ট্রপতির ডেস্কে পড়ে নেই ক্ষমাভিক্ষার আর কোনও আর্জি। দায়িত্বের একটি বড় পর্ব শেষ করে দিয়েছেন প্রণববাবু। |
|
|
|
|
|