কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল এখন মশার আঁতুড়ঘর!
বৃহস্পতিবার কলকাতার নতুন টার্মিনাল পরিদর্শন করতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অফিসারেরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসারেরাও। সেই অফিসারেরাই জানিয়েছেন, টার্মিনালে যথেষ্ট সংখ্যক এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা রয়েছে। এই প্রজাতির মশা ডেঙ্গি ও চিকনগুনিয়ার জীবাণু বহন করে।
১১ মার্চ থেকে নতুন টার্মিনালে একের পর এক বিমান সংস্থা সরে আসতে শুরু করে। তার বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই টার্মিনালের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য জায়গায় জায়গায় বসানো হয় ফুলদানি। তাতে সাজানো রয়েছে ফুল। কেন্দ্র ও পুরসভার অফিসারেরা ফুলদানিগুলির জল পরীক্ষা করেন। দেখেন, সেগুলিতে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, নতুন টার্মিনাল উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে নিয়মিত ফুলদানির ফুল বদলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জল পাল্টানো হয়নি। সেই জলে ডিম পেড়েছে এডিস ইজিপ্টাই। ডিম ফুটে বেরিয়েছে লার্ভা। এত দিন কাচ ভাঙা নিয়ে সমস্যা ছিল। সমস্যা ছিল পরিচ্ছন্নতা নিয়েও। এ বার নতুন এই উপসর্গ! প্রতি দিন কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন বিমান সংস্থার কয়েকশো কর্মী কাজ করছেন এখানে। যে কোনও সময়ে সেখানে মশার কামড়ে যে কারওই ওই দু’টি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, নিয়ম করে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারেরা দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন। গত বছর দলটি যখন কলকাতায় এসেছিল তখনও নয়া টার্মিনাল তৈরি হয়নি। এ দিন কলকাতার নতুন টার্মিনালে সেই দল এসে পরিদর্শন করল। এই টার্মিনালটি চালু হওয়ার পরে পরিষেবার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দিক থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করে। নতুন টার্মিনালে সরে আসার পরে মশার উপদ্রব নিয়ে বারবার অভিযোগ করেন বিভিন্ন বিমানসংস্থার কর্মীরা। জানান, বেসমেন্টে যে অফিস তাঁদের দেওয়া হয়েছে সেখানে প্রচুর মশা। এই ফুলের টবের জমা জল থেকেই এত মশা হচ্ছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, এ দিন এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে টার্মিনাল থেকে ফুলের টবগুলি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্র থেকে আসা স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল নতুন টার্মিনালের স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করছে। ওই রিপোর্ট দিল্লি পাঠানো হবে। যে বেসরকারি সংস্থার হাতে বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণের ভার, তাদের তরফে জানানো হয়েছে যে ফুলের টবে বা ফুলদানির জল বদলানোর কাজ তাদের দেওয়া হয়নি। তার দায়িত্ব বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষেরই। |