বাড়ি ভাঙার সময়ে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকার কেশব সেন স্ট্রিটে।
পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ এক ব্যক্তি ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে বছর পঁয়ত্রিশের এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই ব্যক্তি বাড়ি ভাঙার শ্রমিকের কাজ করছিলেন। তবে রাত পর্যন্ত মৃতের পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই বাকি শ্রমিকেরা পলাতক।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একতলা বাড়িটি পুরো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা ভাঙা ইট-কাঠ বার করে আনছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই এলাকায় ঘুপচি বাড়ি ভেঙে বহুতল নির্মাণের কাজ চলছে। এ দিনের ঘটনাটিও তেমনই একটি বাড়িতে ঘটেছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই বাড়িটি সাবিত্রী জয়সোয়াল নামে এক বৃদ্ধার। বাড়ি ভাঙা শুরু হওয়ার আগে তাঁরা বেচু চ্যাটার্জি স্ট্রিটের একটি বাড়িতে উঠে গিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা পাঁচু রায় জানান, গত কয়েক দিন ধরেই চার-পাঁচ জন শ্রমিক বাড়ি ভাঙার কাজ করছিলেন। |
এ দিনের ঘটনার কথা প্রথমে তাঁরা জানতে পারেননি। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ পুলিশ এলে বিষয়টি সকলের নজরে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় ঘুপচি বাড়ি ভেঙে বেআইনি বহুতল তৈরি হচ্ছে। এই ভাবে বাড়ি করতে গিয়েই পরপর দুর্ঘটনা ঘটছে। বছর খানেক আগে ওই এলাকাতেই বেআইনি বহুতল ভেঙে তিন জন মারা গিয়েছিলেন। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক কর্তাও এ দিন স্বীকার করেছেন, ওই বাড়িটি ভাঙার ক্ষেত্রে পুরসভার কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। বাড়িটি বহু দিনের পুরনো হওয়ার ফলে তার কাগজপত্র ঠিক রয়েছে কি না, সে ব্যাপারেও পুর-কর্তৃপক্ষ বিশেষ কিছু জানাতে পারেননি। পাশাপাশি, বাসিন্দাদের অভিযোগও স্বীকার করে নিয়েছেন ওই কর্তা। তিনি বলেন, “ওই এলাকায় বাড়ি ভেঙে বহুতল বানানোর অভিযোগ রয়েছে। এ সবই পুরসভাকে না জানিয়ে করা হচ্ছে।’’ যদিও পুরসভা এ ব্যাপারে নিজেরাই কোনও ব্যবস্থা নেবে কি না, সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানাননি। এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে ওই এলাকা তথা পুরসভার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পার্থ বসু জানান, “ওই বাড়িটি ভেঙে বহুতল বানানোর কোনও পরিকল্পনা ছিল না। তবে নিয়ম মেনে কাজ হচ্ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।” |