এসারের নালিশে ডাক আদালতের, অবরোধ
সার অয়েল পুলিশের কাছে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তেমন ১৩ জন গ্রামবাসীকে হাজিরা দিতে বলেছে আদালত। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের নাচন রোড তেমাথায় একটি সরু গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করলেন শ’খানেক গ্রামবাসী। যার অধিকাংশই আবার এলাকার তৃণমূল কর্মী-সমর্থক হিসাবে পরিচিত।
পুলিশ গিয়ে আলোচনার আশ্বাস দিলে ঘন্টা দেড়েক পরে অবরোধ ওঠে। তত ক্ষণে অবশ্য শুধু এসারের গাড়ি নয়, বহু গাড়িই আটকে গিয়েছে। যাত্রীরা নাকাল। তবে প্রকল্পের কাজে কোনও প্রভাব পড়েনি বলে এসার সূত্রের খবর।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের দাবি তুলে নাচনে এসার অয়েলের দু’টি পিটের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন গ্রামবাসী। গাড়ি আটকে দেওয়ায় সংস্থার কর্মী ও আধিকারিকেরা দিনভর ঢুকতে পারেননি। গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, গ্রামে পাকা রাস্তা নির্মাণ করে দিতে হবে। পাকা নর্দমা বানাতে হবে। রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। শ্মশানে ঘর বানিয়ে দিতে হবে। এসার কর্তৃপক্ষ জানান, গত বছর ২৯ ডিসেম্বর ‘নাচন সিভিল মেটিরিয়ালস সাপ্লাই অ্যাসোসিয়েশনে’র প্যাডে এই সমস্ত দাবি-দাওয়া লিখে আবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সেটি গ্রহণ করেননি। তাঁরা জানান, নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহকারী সংস্থার প্যাডে নয়, গ্রামবাসীরা সরাসরি দাবিগুলি নিয়ে কথা বলুন।
রাস্তা আটকে বিক্ষোভ নাচনে। —নিজস্ব চিত্র।
সেই দিনই এসার কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশের কাছে অজ্ঞাতপরিচয় গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্ত করে ১৩ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ আনে। বুধবার আদালত তাঁদের হাজিরা দেওয়ার জন্য শমন পাঠিয়েছে। অবরোধকারীদের পক্ষে চন্দন গোস্বামী বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটে গিয়েছিল। এসার কর্তৃপক্ষ গ্রামোন্নয়নের কাজও শুরু করেছেন। এমন সময়ে এই ভাবে গ্রামবাসীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা মোটেই সমর্থন করা যায় না।” মামলা তুলে না নেওয়া হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে বলে হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
ভূগর্ভস্থ ‘কোল বেড মিথেন’ (সিবিএম) তোলার জন্য বর্ধমানের অন্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ও কাঁকসা ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় একশোরও বেশি কুয়ো খুঁড়েছে এসার। লগ্নি হয়েছে প্রায় সাতশো কোটি টাকা। পানাগড়ে ম্যাটিক্স ফার্টিলাইজারের সার কারখানা-সহ দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন সংস্থায় তারা গ্যাস সরবরাহ করবে। কাঁকসায় এসারের প্রকল্প থেকে ম্যাটিক্সের কারখানা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার পাইপলাইন পাতা হচ্ছে। প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ হয়েও গিয়েছে। সব ঠিকঠাক চললে এপ্রিলের মধ্যে বাকিটাও হয়ে যাবে বলে কর্তাদের আশা। আগামী অগস্ট-সেপ্টেম্বরেই ম্যাটিক্সের কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ রাস্তা অবরোধ শুরু হয়। আটকে পড়ে মিনিবাস-সহ অন্যান্য যানবাহন। এসার অয়েলের একটি মেডিক্যাল ভ্যান এবং একটি গাড়ি আটকে পড়ে। এসার অবশ্য গ্রামবাসীদের অভিযোগ মানতে চায়নি। সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “আমরা কারও নাম না করে অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। তদন্ত করে পুলিশই যা করার করেছে।” তৃণমূলের ফরিদপুর-দুর্গাপুর ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলনের আমরা বিরোধী। কিন্তু এসার কর্তৃপক্ষও গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারের দিকটি বিবেচনা করুন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.