গরমের প্রকোপ বাড়তেই রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বাসিন্দারা জানান, স্তর নেমে যাওয়ায় পঞ্চায়েতের সরকারি ও বেসরকারি নলকূপ বিকল হয়ে গিয়েছে। যে সমস্ত নলকূপ সচল সেগুলি দিয়ে আয়রন এবং দুর্গন্ধযুক্ত জল বার হচ্ছে। বাসিন্দারা দূষিত জল পান করছেন। জলস্তর নেমে যাওয়ায় সেচ দেওয়ার কাজেও পর্যাপ্ত জল মিলছে না। কংগ্রেস পরিচালিত বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কণিকা মণ্ডল বলেন, “জলস্তর নেমে যাওয়ায় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সমস্যার কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
পঞ্চায়েতের কৃষি সঞ্চালক তথা কংগ্রেসের নেতা দুর্গেশ ঘোষ বলেন, “পঞ্চায়েতের তরফে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের কাছে নলবাহিত বিশুদ্ধ পানীয় জলের পরিকাঠামোর ব্যবস্থার পাশাপাশি বিকল নলকূপ মেরামত করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্থিক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে বলে জেলাপরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার জানিয়েছেন।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯টি সংসদে প্রায় ১২ হাজার পরিবারের বসবাস। বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। ১০ শতাংশ পরিবার বিপিএল তালিকাভূক্ত। বেশিরভাগেরই পেশা কৃষিকাজ ও দিনমজুরি। প্রায় চার হাজার পরিবারের নিজস্ব নলকূপ নেই। তাঁরা সরকারি নলকূপের জলের ওপরেই নির্ভরশীল। পঞ্চায়েতে ৩০০টি সরকারি নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে জলস্তর নেমে যাওয়ায় এক মাস ধরে ৮০টি নলকূপ বিকল হয়ে গিয়েছে। বাকি নলকূপগুলি অধিকাংশ দিয়ে আয়রনও দুর্গন্ধযুক্ত জল বার হচ্ছে বলে অভিযোগ।
পঞ্চায়েতের কর্মীরা জানিয়েছেন, প্রায় হাজার পরিবারের নিজস্ব নলকূপ বিকল হয়েছে। অন্যদের আয়রন জল বার হচ্ছে বলে অভিযোগ। চলতি মরসুমে পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা ও বোরো ধানের চাষ হয়েছে। পঞ্চায়েতের ঝিটকিয়া সংসদের বাসিন্দা ভক্ত দাস ও পকোম্বা সংসদের বাসিন্দা পৃথ্বীশ বর্মন জানান, সরকারি ও বেসরকারি নলকূপের জল মুখে দেওয়া যাচ্ছে না। অধিকাংশ পরিবার দিনমজুরি করে সংসার চালান। বাজার থেকে ফিল্টার কিনে জল শোধন করার ক্ষমতা নেই। তাই দূষিত জলই পান করতে হচ্ছে।
পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা সুমন্ত দাস ও ট্যাগরা এলাকার বাসিন্দা গুলজার আলি চলতি মরশুমে পাঁচ বিঘা করে জমিতে বোরো ধান ও ভুট্টা চাষ করেছেন। তাঁরা বলেন, “জলস্তর নেমে যাওয়ায় ডিজেল চালিত পাম্পসেট ভাড়া করেও জমিতে জলসেচ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জল উঠছে না। অবিলম্বে বৃষ্টি না হলে চাষে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছি।” |