কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর আগমনেও অনিশ্চয়তা কাটল না। শিলং-এর ‘নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গাঁধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ অ্যান্ড মেডিক্যাল সায়েন্সেস’ (নেইগ্রিম্স) থেকে ‘এমবিবিএস’ পাশ করার পরেও ছাত্রছাত্রীরা আপাতত ‘চিকিত্সক’ নন। কারণ মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার স্বীকৃতিই এখনও পায়নি ‘নেইগ্রিম্স’। আবশ্যক সেই স্বীকৃতি ছাড়াই ‘নেইগ্রিম্স’-এ এমবিবিএস পড়ানো শুরু হয়েছিল। গত কাল সেখানকার প্রথম ব্যাচে উত্তীর্ণ হওয়া ‘এমবিবিএস’-দের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। কিন্তু কবে এই চিকিত্সকরা এমসিআই-এর স্বীকৃতি পেতে পারেন সেই বিষয় নিয়ে আজাদ কোনও নির্দিষ্ট জবাবই দিতে পারেননি।
১৯৮৭ সালে রাজীব গাঁধী ‘নেইগ্রিম্স’ প্রতিষ্ঠা করেন। ইন্দিরার নামে প্রতিষ্ঠান হলেও ২৬ বছর পরে ‘নেইগ্রিম্স’ চত্বরে তাঁর মূর্তি বসল। ইন্দিরা মূর্তির আবরণ উন্মোচনে আসেন আজাদ। পাশাপাশি ‘ইন্দিরা গাঁধী ওরেশন সেন্টার’-এরও উদ্ধোধন করা হয়। আজাদ জানান, কেন্দ্র ‘নেইগ্রিম্স’-এ ‘নার্সিং কলেজ’, ‘আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এমবিবিএস কলেজ’ ও ‘রিজিওনাল ক্যান্সার সেন্টার’ গড়ার জন্য ২৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। গ্রামীণ স্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীনে উত্তর-পূর্বের জন্য মোট বরাদ্দ ৫৯৭০ কোটি টাকা।
কিন্তু ‘নেইগ্রিম্স’ কবে স্বশাসিত সংস্থা হবে, কবে এখান থেকে পাশ করা এমবিবিএসরা এমসিআই স্বীকৃতি পাবে— তা নিয়ে আজাদ কোনও নিশ্চিত উত্তর দেননি। তিনি বলেন, “স্বশাসন ও স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলছে। এমসিআই মানদণ্ড অনুযায়ী শিক্ষক ও পরিকাঠামো না থাকায় ‘নেইগ্রিম্স’-এর এমসিআই স্বীকৃতি মেলার বিষয়টি বিলম্বিত হচ্ছে। সেই অভাব মেটাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে সরকার।” তিনি মেনে নেন, দূরত্বের জন্যই মেঘালয়ের ‘নেইগ্রিম্স’-এ বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা শিক্ষকতা করতে আসতে চাইছেন না। সাম্প্রতিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরে ৬৯টি খালি পদে মাত্র ২৯ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা গিয়েছে।
মন্ত্রীর আশা, “গুয়াহাটি-শিলং ফোর-লেন সড়ক ও উমরয় বিমানবন্দর ফের চালু হলে সমস্যা কমতে পারে। ‘নেইগ্রিম্স’-এ পড়াতে এলে অতিরিক্ত ভাতা দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। অবসরের বয়সও ৬৫ করা হবে। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে গুণগত মানের সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না।” কিন্তু কবে ভাল ডাক্তাররা ‘নেইগ্রিম্স’-মুখী হবেন, কতদিনে এমসিআই ‘নেইগ্রিম্স’-র পরিকাঠামোকে ‘সন্তোষজনক’ আখ্যা দেবে, কবে এমসিআই-এর বহু আকাঙ্ক্ষিত স্বীকৃতি পাবে ‘নেইগ্রিম্স’— তার উত্তর আপাতত কারও কাছে নেই। তাই চিকিত্সক হওয়ার পাঠ শেষ করার পরেও কার্যত মূল্যহীন শংসাপত্র নিয়ে ‘নেইগ্রিম্স’-এর ‘এমবিবিএস’-রা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে। |