৩ ঘণ্টা তফাতে নৈশপ্রহরীর দুই ভাইয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বাঁধছে। মঙ্গলবার ডুয়ার্সের কালচিনি চা বাগানের গুদাম লাইনে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতদের নাম হরিলাল রবিদাস (৩৫) ও প্রেমলাল রবিদাস (৩০)। তাঁরা দুজনেই ওই বাগানের চৌকিদার ছিলেন। সোমবার রাতভর পাহারা দিয়ে বাড়ি ফেরার পর দুজনে ঝিমোতে পড়েন। হরিলালের বাঁ হাতের মধ্যমায় ও প্রেমলালের তর্জনীতে বাড়ির লোক কালো দাগ দেখেন। দুপুরের মধ্যে আঙুল ফুলে পুঁজ জমে যায়। দু’জনেই বমি করতে থাকেন। প্রেমলালকে প্রথমে ঝাড়ফুঁক ও পরে লতাবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হয়। সেখান থেকে প্রেমলালকে রেফার করা হয় আলিপুর দুয়ার মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে নেওয়ার পথে ভোর ৫টা নাগাদ রাস্তায় তাঁর মৃত্যু হয়। হরিলালকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। বেলা ৮টা নাগাদ বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। জলপাইগুড়ির জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার জানিয়েছেন, দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এসডিপিও আলিপুরদুয়ার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, “অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত হলে স্পষ্ট হবে।” কালচিনির ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রেমলালকে যখন নেওয়া হয় তখন তাঁকে দেখেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রাজেশ চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, প্রেমলালবাবুকে যখন আনা হয় তাঁর অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। অবস্থা দেখে মহকুমা হাসপাতালে রেফার করা হয়। তিনি বলেন, “সংক্রমণ থেকে এটা হতে পারে। ভাইরাসজনিত কারণে অসুস্থ হয়েছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখতে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়। তেমন কোনও সূত্র মেলেনি। কোনও বিষাক্ত পোকার কামড়ে এমন হতে পারে। তা ময়নাতদন্তের পরেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।” আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুজয় বিষ্ণু জানান, বৃহস্পতিবার ময়না তদন্ত হবে। এই ঘটনায় বাগানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে, দুজনের বাড়ি পাশাপাশি। গত শুক্রবার ওই এলাকার বাসিন্দা দশাই রিখিয়াশন (৪৫) নামে এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তৃণমূল নেতা গণেশ মাহালি বলেন, “ওঁর আঙুলেও কালো দাগ ছিল।” গণেশবাবু বলেন, “দশাইয়ের মৃত্যুর পরে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জানিয়ে তাঁর পরিবারের লোকজনেরা দশাইয়ের দেহটি পুড়িয়ে দেন।” |