পঞ্চায়েত মামলায় প্রথম দিন থেকেই জুড়ে গিয়েছিল বিজেপি। বুধবার জুড়ল সিপিএম, সিপিআই-সহ আরও দশটি রাজনৈতিক দল। আজ, বৃহস্পতিবার কংগ্রেসও মামলায় সঙ্গী হওয়ার আবেদন জানাবে। প্রত্যেকেই যথাসময়ে অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট করার দাবি তুলেছেন। কিন্তু এর ফলে যে মামলা দীর্ঘতর হবে এবং যথাসময়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এই আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
কেন এই আশঙ্কা? আইনজীবী মহলের বক্তব্য, কোনও মামলায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা যত বাড়ে, মামলা তত বেশি দিন গড়ায়। কারণ, মামলায় যারা অংশ নেবে, তাদের সবাইকে বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দিতে হয়। আবেদনকারীদের সবার বক্তব্য শোনার পরে রাজ্য নিজেদের বক্তব্য জানাবে। বক্তব্য, পাল্টা বক্তব্যে কত সময় লাগবে, তার উপরে নির্ভর করবে মামলার ভবিষ্যৎ।
মঙ্গলবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল তাঁর সওয়াল শেষ করার পরে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, বেশ কিছু রাজনৈতিক দল ওই মামলায় অংশ নিতে চায়। তিনি তাদের কারও কারও হয়ে সওয়াল করবেন। সেই মতো এ দিন আলাদা ভাবে মামলায় সামিল হতে চেয়ে আবেদন করে ওই ১০টি রাজনৈতিক দল। প্রতিটি আবেদনের বয়ান মোটামুটি একই। তাতে বলা হয়েছে, যথাসময়ে মনোনয়নপত্র জমা থেকে শুরু করে নির্বাচনের ফল প্রকাশ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে অবাধে মুক্ত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক। সিপিএমের হয়ে মামলা লড়বেন বিকাশবাবু। অন্যদের হয়ে কারা লড়বেন, তা এ দিন পরিষ্কার হয়নি।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে মামলায় যে তারাও অংশীদার হতে চলেছে, তা এ দিন ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। কমিশন যে আবেদনে করেছে, তার বয়ান খতিয়ে দেখে এই মামলার অংশীদার হতে চাইছে কংগ্রেস। এ কথা জানিয়েছেন দলের আইনজীবী নেতা অরুণাভ ঘোষ।
রাজ্যকে বিরোধীশূন্য করে দেওয়ার যে হুমকি খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দিয়েছেন, তার প্রতিবাদে নির্বাচন কমিশনের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানাবে কংগ্রেস। বুধবার অরুণাভবাবু বলেন, “রাজ্যের এক জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী হুমকি দিচ্ছেন, বিরোধীদের কাউকে ভোটে দাঁড়াতে দেবেন না। কংগ্রেসের হয়ে যাতে কেউ পঞ্চায়েতে না দাঁড়ায়, সে জন্যও তিনি হুমকি দিচ্ছেন। মন্ত্রী হয়ে কী ভাবে এমন কথা বলেন! ওঁকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কোনও নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে দিয়ে জনস্বার্থ মামলা করানো হবে।” এ ছাড়াও, হাইকোর্টে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে চলা মামলার শুনানির সময় জ্যোতিপ্রিয়বাবুর প্রসঙ্গটি কংগ্রেস তুলবে বলে অরুণাভবাবু জানান। অরুণাভবাবুর বক্তব্য, “মন্ত্রীর হুমকির বিরুদ্ধে কেউ থানার দ্বারস্থ হলে পুলিশ সে অভিযোগ তো নেবে না! সে জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরুর সপ্তাহখানেক আগে থেকে এলাকায় এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানাব আদালতে।”
আজ, বৃহস্পতিবার মূল মামলাটির ফের শুনানি হবে। মঙ্গলবার যে ঘরে মামলা শোনা হয়েছিল, তা তুলনায় ছোট হওয়ায় অনেকেই সওয়াল শুনতে পারেননি। এজলাসে ঠেলাঠেলির জন্য এক সময় শুনানিও বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানি হবে বড় ঘরে। |