|
|
|
|
উন্নয়নের কাজে ঘাটতি মেনেই জেলা পরিষদ দুষছে প্রশাসনকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গত দু’বছরে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণে ঘাটতি থেকে গিয়েছে বলে মেনে নিল বামফ্রন্ট পরিচালিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। তবে এর জন্য তারা দায়ী করছে জেলা প্রশাসনকে। সদ্য প্রকাশিত আট পাতার এক পুস্তিকায় লেখা রয়েছে, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী কালে সরকারের গৃহিত নীতির ফলে জনপ্রতিনিধি এবং আধিকারিকদের সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এর জেরে উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে।’’ এর পর তৃণমূলও কাজের খতিয়ান তুলে ধরে পাল্টা পুস্তিকা প্রকাশে উদ্যোগী হয়েছে। তা নিয়ে দলের জেলা কমিটির বর্ধিত সভায় আলোচনাও হয়েছে।
কী রয়েছে সদ্য প্রকাশিত ওই পুস্তিকায়? শুরুতেই লেখা, ‘১৯৭৮ সালের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে মানুষের আপনজন হয়েছে।...’ মূলত, উন্নয়ন খতিয়ানই তুলে ধরা হয়েছে তাতে। জনস্বাস্থ্য-পরিবেশ থেকে শিক্ষা-সংস্কৃতি, ক্ষুদ্র শিল্প, ক্ষুদ্র সেচ প্রভৃতি বিষয় দু’টি খতিয়ানে ভাগ করে পরিবর্তনের আগের ৩ বছরে কী কী হয়েছে, আর পরের ২ বছরে কী হয়েছে— তা তথ্যের ভিত্তিতে তুলে ধরা হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “গত দু’বছরে প্রশাসনিক সহযোগিতা মেলেনি বলে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ প্রত্যাশিত ভাবে এগোয়নি। অনেক জায়গায় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সঙ্গে আলোচনাই করেননি সংশ্লিষ্ট বিডিও।” তাঁর অভিযোগ, “গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের এড়িয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছে।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “মানুষ নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝতে পারবেন পরিবর্তনের পরে পরিস্থিতি ভালোর দিকে, না কি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে।” |
|
খতিয়ান দিয়েই পুস্তিকা জেলা পরিষদের। —নিজস্ব চিত্র। |
এ নিয়ে মন্তব্য করেননি জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা বলেন, “বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা কী শুধু গত দু’বছর ধরেই পড়ে থাকছে? তার আগে পড়ে থাকত না! সব কাজ সময়ে হত?”
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে সিপিএমের উদ্যোগে এই পুস্তিকা প্রকাশিত হয়েছে বলে খবর। দলের তরফে পুস্তিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জেলা পরিষদের কয়েক জন কর্মাধ্যক্ষকে। প্রধান দায়িত্বে ছিলেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিশির মহাপাত্র। পুস্তিকা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে তৃণমূল থেকে। মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতির কথায়, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে সিপিএম অপপ্রচার করছে। জেলা পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণে ব্যর্থ হয়ে নিজেদের দোষ ঢাকতেই সরকারকে দুষছে সিপিএম।”
পরিবর্তনের আগে-পরের উন্নয়ন নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজায় নতুন সংযোজন ওই পুস্তিকা। তৃণমূলের পুস্তিকায় অভিযোগের কী জবাব দেওয়া হয়, সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। |
|
|
|
|
|