|
|
|
|
চিঠি পেয়ে ক্ষোভ |
প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ অন্য জেলায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দূর জেলার শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্র বাছায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ানোর পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে শনিবার অথবা রবিবার ডিএড কোর্সের প্রশিক্ষণ নিতে হবে শিক্ষকদের। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের কিছু প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে এই প্রশিক্ষণ শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে তাঁদের। গোটা সপ্তাহ ধরে পড়ানোর পর শনি ও রবিবার এতদূরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়াটা কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন ওই প্রাথমিক শিক্ষকরা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি গোপাল সাহু অবশ্য জানান, এনসিটিই’র নির্দেশিকা অনুযায়ী দূরশিক্ষার মাধ্যমে প্রশিক্ষণের জন্য একটি শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্রে ১০০ জনের বেশি ভর্তি করা যাবে না। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একটি সরকারি ও ১২টি বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়াও কিছু বিএড কলেজে এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও জেলারয় সব শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায়নি। বাধ্য হয়ে কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে অন্য জেলায় পাঠাতে হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের জেলায় প্রায় ৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে এই প্রশিক্ষণ নিতে হবে। সেই তুলনায় জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা কম থাকায় বাইরের জেলায় প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এর ফলে কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যেতে হবে। তাঁদের সমস্যা হবে বলে আমরা পর্ষদকে জানিয়েছি। বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য পর্ষদ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।”
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের আইন অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকে এনসিটিই অনুমোদিত প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ কোর্স করতে হবে। প্রশিক্ষণহীন বা এক বছরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের ২০১৫ সালের মার্চের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ নিতে হবে। রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষকদের দূরশিক্ষা পদ্ধতিতে এই প্রশিক্ষণের জন্য রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্র ও বিএড কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করেছে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বিভিন্ন জেলায় কর্মশালা করে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাছাইয়ের জন্য পছন্দের তালিকা নিয়েছিল। কিন্তু সেই পছন্দ না মেনেই দূরের জেলায় প্রশিক্ষণে পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
তমলুক উত্তর চক্রের প্রাথমিক শিক্ষক জয়দেব বর্মণ, স্বপ্না মাইতিদের মুর্শিদাবাদের কান্দির উষাঙ্গিনী কলেজ অফ এডুকেশন ফর ওমেন কলেজে প্রশিক্ষণ নিতে যেতে বলা হয়েছে। একই ভাবে তমলুক উত্তর চক্রের প্রাথমিক শিক্ষক মানস বর্মণ ও সুদেষ্ণা দে’কে প্রশিক্ষণ নিতে যেতে বলা হয়েছে বীরভূমের শান্তিনিকেতন ডিএড কলেজে। এই সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, শুক্রবার বা শনিবার বিদ্যালয়ের ছুটির পর বাস-ট্রেনে কয়েকশো কিলোমিটার যাতায়াত করে ফের সোমবার স্কুলে আসা সহজ কাজ নয়। শিক্ষার স্বার্থেই জেলার মধ্যে শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাটা জরুরি। এই দাবিতে মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও বুধবার নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে স্মারকলিপি দিয়েছে। |
|
|
|
|
|