|
|
|
|
চার্জশিট দেয়নি সিআইডি, ইউএপিএ মামলায় জামিন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
সাঁকরাইল থানার ওসিকে অপহরণের ঘটনায় ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত এক ‘মাওবাদী নেত্রী’র জামিন মঞ্জুর করল ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালত। মানসী বাস্কে ওরফে সীতা নামে বছর তেইশের ওই তরুণীর বাড়ি শালবনি থানার জামশুলি গ্রামে। বুধবার জামিন পাওয়ার পর আদালত থেকেই দাদার সঙ্গে বাড়ি ফিরে যান মানসী।
সিআইডি সূত্রের দাবি, ২০০৯ সালের ২০ অক্টোবর সাঁকরাইল থানায় হামলা চালিয়ে ওসি অতীন্দ্রনাথ দত্তকে অপহরণের ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন ‘সীতা’ নামে এক মাওবাদী পরে লালগড়ের গোপন ডেরায় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে যে ওসিকে মুক্তি দিয়েছিলেন মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেণজি। |
|
আদালত চত্বরে মানসী বাস্কে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
গত ৮ ডিসেম্বর শালবনির জামশুলি গ্রাম থেকে মানসীকে গ্রেফতার করার পর পুলিশ দাবি করেছিল, মানসী-ই মাওবাদী নেত্রী সীতা। মাওবাদী নেতা বিকাশের স্কোয়াডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি। ২০০৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর লালগড় থানার বাঁশবেড় গ্রামে কয়েকশো সশস্ত্র গ্রামবাসীকে সামনে রেখে পুলিশকে গ্রামে ঢুকতে বাধা দিয়েছিল মাওবাদীরা। ওই জমায়েতের নেতৃত্বেও সীতা ছিলেন। রাষ্ট্রদ্রোহের ওই মামলাটিতে প্রথমে মানসীকে অভিযুক্ত করেছিল পুলিশ। পরে গত ৩ জানুয়ারি সাঁকরাইলের ইউএপিএ মামলাটিতেও তাঁকে যুক্ত করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটিতে লালগড় থানার পুলিশ ৯০ দিনের মধ্যে মানসীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করতে পারেনি। ফলে, গত ৮ মার্চ অভিযুক্তের আইনজীবী কৌশিক সিংহের আবেদনের ভিত্তিতে ওই মামলায় মানসীর জামিন মঞ্জুর করে আদালত। তবে ওই সময় ইউএপিএ মামলায় জামিন না-হওয়ায় মানসীকে ঝাড়গ্রাম উপসংশোধনাগারে (ঝাড়গ্রাম সাব-জেল) জেলবন্দি থাকতে হয়।
সাঁকরাইলের ইউএপিএ মামলাটির তদন্তে রয়েছে সিআইডি। ইউএপিএ মামলায় সর্বোচ্চ ১৮০ দিনের মধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ইউএপিএ মামলার ক্ষেত্রে ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দাখিল করা না গেলে আরও ৯০ দিন সময় চেয়ে আদালতে আবেদন জানাতে হয়। কিন্তু, সিআইডির পক্ষ থেকে আদালতে সেই আবেদন করা হয়নি। বুধবার আদালতে মানসীর হাজিরার দিন ছিল। অভিযুক্তের আইনজীবী কৌশিক সিংহ দাবি করেন, “ইউএপিএ মামলাটির এফআইআর-এ সীতা বা মানসীর নাম নেই। ধৃতের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ না থাকায় সিআইডি ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে পারেনি। তদন্ত সাপেক্ষে চার্জশিট জমা দেওয়ার জন্য আরও ৯০ দিন সময় চেয়ে আদালতে আবেদনও জানায়নি তদন্তকারী সংস্থাটি।” কৌশিকবাবুর অভিযোগ, “ইউএপি-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ আইনটিকে এ রাজ্যে যথেচ্ছ ভাবে অপপ্রয়োগ করা হয়েছে। সরল আদিবাসী গ্রাম্য তরুণী মানসীও সেই অপপ্রয়োগের শিকার।” এ দিন সরকারি কৌঁসুলি কনিষ্ক বসু আদালতে কোনও মন্তব্য করেননি। আইনজীবী মহলের বক্তব্য, আইনত, এ দিন সরকারি কৌঁসুলির জামিনের বিরোধিতা করার কোনও জায়গা ছিল না। মানসীর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক প্রিয়জিত্ চট্টোপাধ্যায়। সিআইডির তদন্তকারী অফিসার এ দিন আদালতে হাজির হননি। জামিন পাওয়ার পর দাদা বাপি বাস্কের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় আদালত প্রাঙ্গণে মানসী বলেন, “জামিনে ছাড়া পেয়ে খুব ভাল লাগছে। বাড়ি ফিরে আগের মতোই স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকতে চাই।” |
|
|
|
|
|