ইস্টবেঙ্গল-৪ (হাডি-নিজ গোল, বরিসিচ-২, চিডি)
ট্যাম্পাইন রোভার্স-২ (হাজিবুলিক, খইরুল) |
চিডি-বরিসিচ যুগলবন্দি। মেহতাবের মরিয়া লড়াই, তিন কাঠির তলায় অভিজিত মণ্ডলের নিখুঁত টাইমিংবিদেশের মাঠে লাল-হলুদের সব দাদাগিরিকেও এ দিন ছাপিয়ে মুখ্য হয়ে উঠল ‘গড়াপেটা কেলেঙ্কারি’! বিদেশের মাঠে বিদেশি ম্যাচ পরিচালকদের গড়াপেটা!
ফুটবলকে কলঙ্কিত করার পিছনে লেবাননের এক রেফারি এবং দুই সহকারী রেফারি। যাঁদের উপর দায়িত্ব ছিল বুধবার সিঙ্গাপুরের জালান বেসার স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গল-ট্যাম্পাইন রোভার্স এএফসি কাপ ম্যাচ পরিচালনা করার। কিন্তু ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে জানাজানি হয়ে যায়, ম্যাচ গড়াপেটার অতীত কারণে এই তিন রেফারি আলি সাবাগ, আলি ঈদ এবং আবদুল্লা তালেব-কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে সিঙ্গাপুর পুলিশ। ফুটবল কলঙ্কিত হওয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সিঙ্গাপুর ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও। ওই তিন রেফারির পরিবর্তে তড়িঘড়ি মালয়েশিয়া আর তাইল্যান্ড থেকে রেফারি উড়িয়ে এনে ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ করা হয়।
ম্যাচের পর সিঙ্গাপুর থেকে ফোনে ইস্টবেঙ্গল ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্যও বললেন, “আমরা ব্যাপারটা শুনেছি। এ রকম ঘটনা সত্যিই ফুটবলের লজ্জা। দোষী সাব্যস্ত হলে ওই তিন রেফারি নিশ্চয়ই শাস্তি পাবে।” কোচ মর্গ্যান অবশ্য বলছেন, “কী হয়েছে ঠিক করে এখনও জানি না। মন্তব্য করাটা উচিত হবে না।” |
রেফারি-কেলেঙ্কারির প্রভাব অবশ্য মাঠে পড়েনি। ট্যাম্পাইন রোভার্সের বিরুদ্ধে দাপটের সঙ্গে জিতে এএফসি কাপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের পথে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ করল ইস্টবেঙ্গল। ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে নিজেদের গ্রুপের শীর্ষে রয়েছেন চিডিরা।
জিতলেও অবশ্য লাল-হলুদ রক্ষণের পারফরম্যান্স কোচের চিন্তা বাড়াবে। গুরবিন্দরের জায়গায় এ দিন শুরু করেছিলেন রাজু গায়কোয়াড়। কিন্তু ওপারা-রাজু জুড়ি চূড়ান্ত ব্যর্থ। রক্ষণের ভুলেই দু’টি গোল হজম করে ইস্টবেঙ্গল। অভিজিতের গোলকিপিং দক্ষতার কল্যাণে দু’বারে বেশি ব্যবধান কমাতে পারেনি সিঙ্গাপুরের ক্লাব, এই যা রক্ষে! রক্ষণের ভুলের ঘাটতি মেটানোর মরিয়া চেষ্টা করেছেন মেহতাব। মাঝমাঠকে সচল রাখার পাশাপাশি ডিফেন্সও সামলে। আক্রমণে চিডি-বরিসিচ জুটি দ্বিতীয়ার্ধে অনবদ্য হয়ে উঠেছিল। প্রথমার্ধে অবশ্য ম্যাড়ম্যাড় দেখাচ্ছিল অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারকে। বল ধরা-ছাড়ায় যে বরিসিচের ভুলের অন্ত ছিল না, তিনিই হাফটাইমে সাহেব কোচের ভোক্যাল টনিকে পাল্টে গিয়ে জোড়া গোল করেন। দু’বারই চিডির পাস থেকে।
নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারকে আটকে বাজিমাত করতে চেয়েছিল রোভার্স। কিন্তু চিডি সব বাধা টপকে নিজে তো গোল করলেন, গোল করালেনও। বরিসিচ যদি সব সুযোগ কাজে লাগাতে পারতেন, বিদেশের মাঠে আরও বড় ব্যবধানে জিতত ইস্টবেঙ্গল। এক সময়ে সিঙ্গাপুরে কোচিং করানো মর্গ্যান বলেছেন, “এই ম্যাচ জেতাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে নক আউটে যেতে আরও ৫-৬ পয়েন্ট পেতেই হবে।”
ইস্টবেঙ্গল: অভিজিৎ, খাবড়া (গুরবিন্দর), সৌমিক, ওপারা, রাজু, লালরিন্দিকা (ভাসুম), সঞ্জু, পেন, মেহতাব, বরিসিচ (মননদীপ), চিডি। |