ইডেনের বাইশ গজে যখন চলছে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম দিল্লি ডেয়ারডেভিলস উদ্বোধনী যুদ্ধ, ভিআইপি বক্সে তখন প্রায় শেষ আর একটা লড়াই। এটা অবশ্য ব্যাট-বলের ক্রিকেটীয় মহারণ নয়, বলিউডি রাজনীতির দ্বন্দ্বযুদ্ধ। যে যুদ্ধের নাম বাজিগর বনাম খিলাড়ি!
অগস্ট মাসে মুক্তি পেতে চলা ‘ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বই টু’ ছবির প্রচারের কাজে এ দিনই শহরে ঢুকে পড়েছিলেন বলিউডের ‘খিলাড়ি’ অক্ষয়কুমার। সঙ্গে নতুন ফিল্মে তাঁর দুই সহ-অভিনেতা সোনাক্ষী সিংহ এবং ইমরান খান। পরিকল্পনাটা ছিল খুব সহজ। বিকেলে শহরের পাঁচতারা হোটেলে প্রচারের প্রথম এপিসোড। তার পরপরই ইডেনের কর্পোরেট বক্সে ছবির প্রচারের দ্বিতীয় ইনিংস। এক দিকে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের জন্য গলা ফাটানো, অন্য দিকে ছবির প্রোমোশন। |
ক্রিকেটের সঙ্গে বিনোদনের গভীর প্রেমের যুগে ব্যাপারটা একেবারেই নতুন নয়। প্রায় প্রত্যেক আইপিএলেই কোনও না কোনও বলিউডি তারকাকে দেখা গিয়েছে নতুন সিনেমার প্রচারে মাঠে নেমে পড়তে। কিন্তু এ বারের ঘটনাটা ব্যতিক্রম। তার কারণটা কী? না, অক্ষয়ের নতুন ছবির মুক্তির দিন!
সামনের অগস্টে ঈদের সময় মুক্তি পেতে চলেছে অক্ষয়-সোনাক্ষীর ‘ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বই টু’। আর এখানেই জট। কেকেআর মালিক শাহরুখ খানের পরের সিনেমা ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’-ও যে মুক্তি পাচ্ছে ওই তারিখে! যে ছবিতে শাহরুখের উল্টো দিকে দেখা যাবে মঙ্গলবার আইপিএল সিক্স উদ্বোধন মাতিয়ে দেওয়া দীপিকা পাড়ুকোন-কে। তিনিও এ দিন সাদা শার্টে শাহরুখের বক্সে। মঙ্গলবার রাত থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছিল, যে কাজের জন্য ইডেনে আসছেন, শেষ পর্যন্ত আদৌ কি সেই অভিযানে সফল হবেন খিলাড়ি? শাহরুখের ডেরায় অক্ষয় পারবেন কিং খানের ছবির সঙ্গে একই দিনে মুক্তি পেতে চলা সিনেমার প্রচারে নামতে? কলকাতা আসার আগে যদিও ব্যাপারটা উড়িয়ে দিয়ে অক্ষয় বলে দিয়েছিলেন, “হ্যাঁ, আমি ইডেনে যাব। কিন্তু আমি মনে করি দুই নায়কের লড়াইটা ক্রিকেট মাঠে নয়, বক্স-অফিসে হওয়াই ভাল।”
পরে ইডেনে দাঁড়িয়ে অক্ষয় বলে যান, “আমরা এখানে এসেছি কারণ এটা এ বারের আইপিএলের প্রথম ম্যাচ। অভিজ্ঞতাটাই আলাদা।” আপনি কোন দলকে সমর্থন করছেন? ‘খিলাড়ি’র জবাব, “আইপিএলে যারা খেলে তারা তো ভারতীয়। আমি সব সময়ই বলি, সেরা দলই যেন জেতে।” অক্ষয়ের কথাতেও কিন্তু নিজের সিনেমা প্রসঙ্গ ওঠেনি। অক্ষয়ের নতুন ফিল্মের প্রযোজক একতা কপূরও আগে বলেন, “অক্ষয়রা ক্রিকেট ভালবাসে বলেই মাঠে যাচ্ছে।” |
বুধবারের ইডেনে মাঠের লড়াইটা যেমন একপেশে ভাবে জিতল তাঁর টিম কেকেআর, মাঠের বাইরের যুদ্ধে কিং খানের ‘জয়’টাও শেষ পর্যন্ত প্রায় একই রকম হয়ে দাঁড়াল। ‘বি’ ব্লকের দর্শক-সমুদ্রকে তৃপ্ত করতে যখন কর্পোরেট বক্সের ব্যালকনি মাতিয়ে দিচ্ছেন শাহরুখ, তখন অক্ষয় বেশির ভাগ সময়ই থেকে গেলেন অন্তরালে। অল্প সময়ের জন্য শুধু সোনাক্ষী, ইমরানদের নিয়ে ব্যালকনিতে এসে দর্শকদের দিকে হাত নাড়লেন। অটোগ্রাফ-শিকারিদের আব্দার মেটালেন, ছবিও তুললেন। ব্যাস, ওইটুকুই। শাহরুখের মতো মাতিয়ে দিতে পারলেন কই?
আর যে কাজের জন্য এসেছিলেন অক্ষয়, সেটাই তো হল না! |