সম্পাদকীয় ২...
বুধবার কেন নহে
বিচারপতি অরুণ মিশ্র কলিকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে আসীন হওয়ার পর হইতেই আদালতে কর্মসংস্কৃতি ফিরাইবার কথা বলিতেছেন। তিনি প্রচলিত দীর্ঘসূত্রতার বিরোধী। কত বিচারপ্রার্থীর আন্তরিক সাধুবাদ তাঁহার উদ্দেশে ধাবিত হইতেছে, বকেয়া মামলার সংখ্যা দেখিলে অনুমান করা সম্ভব। কলিকাতা হাইকোর্টে এই মুহূর্তে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ মামলা চলিতেছে— পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করিয়া রাজ্য নির্বাচন কমিশন বনাম রাজ্য সরকার। ‘কলিকাতা’র আদি ঐতিহাসিক সীমানার কথা মনে রাখিলে হয়তো প্রশ্ন তুলিবার অবকাশ আছে, যে পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত বিতর্কের প্রাথমিক মামলা হাইকোর্টে কেন? কিন্তু সে প্রশ্ন আপাতত মুলতুবি থাকুক। ঘটনা ইহাই যে, এই মামলার ফয়সলা না হওয়া পর্যন্ত গ্রামীণ স্থানীয় প্রশাসনের কাজ গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকিবে। যথাসময়ে নির্বাচন সম্পন্ন না হইলে পঞ্চায়েত খাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দও পাওয়া যাইবে না বলিয়া কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জানাইয়াছেন। সর্বোপরি, রাজ্য সরকার না কমিশন, কাহার মতে নির্বাচন হইবে, এই প্রশ্নটি ভারতীয় গণতন্ত্রের পক্ষে এক্ষণে অতি গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই এই মামলার গুরুত্ব বাড়াইয়া বলিবার উপায় নাই। মঙ্গলবার মামলার প্রথম শুনানি ছিল। বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের এজলাসে তাহার জন্য বরাদ্দ হইয়াছিল আধ ঘণ্টা সময়। পরবর্তী শুনানির দিন পড়িয়াছে আজ, বৃহস্পতিবার।
আদালতের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা বজায় রাখিয়াও একটি প্রশ্ন তোলা প্রয়োজন— মঙ্গলবারের পর বৃহস্পতিবার কেন? বুধবার কেন নহে? মাত্র আধ ঘণ্টা কেন, অধিকতর সময় কেন নহে? অনুমান করা চলে, ইহা অভ্যাসের দায়। ভারতীয় বিচারবিভাগের বহুবিধ খ্যাতি আছে, কিন্তু দ্রুততা তাহার অন্তর্গত নহে। এই ভাবেই মামলার শুনানির দিন পড়িয়া থাকে। সংশ্লিষ্ট বিচারপতি সেই প্রচলিত ধারাটিই বজায় রাখিয়াছেন মাত্র। কিন্তু, মহামান্য আদালতের প্রধান বিচারপতি স্বয়ং যখন দীর্ঘসূত্রতার ব্যাধির চিকিৎসা চাহিতেছেন, তখন আশা করা চলে, অন্যান্য বিচারপতিরাও সেই ইচ্ছার মর্যাদা রাখিবেন। কোনও মামলাই অকারণে দীর্ঘ দিন ধরিয়া চলা কাম্য নহে। আলোচ্য মামলাটি তো নহেই। যত দ্রুত সম্ভব তাহার ফয়সলা হওয়া প্রয়োজন। বিচারপতির বিবেচনাই শিরোধার্য, কিন্তু তাঁহার সমীপে সবিনয় নিবেদন— তিনি এই মামলাটির ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করিবেন না। প্রতি দিন, প্রতিটি মিনিট গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সময় বাঁধিয়া দিন, আইনজীবীদের সেই সময় মানিয়া চলিতে বাধ্য করুন। কোনও আইনজীবী, তিনি যে পক্ষেরই হউন, সেই সময়সীমার মর্যাদা না রাখিতে পারিলে মহামান্য আদালত প্রতিবিধানের ব্যবস্থা করুক। প্রধান বিচারপতি বলিয়াছেন, কোনও আইন বাঁধিয়া দীর্ঘসূত্রতার রোগের চিকিৎসা সম্ভব নহে, তাহার জন্য মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। সেই পরিবর্তন স্বতঃ আসিবে না, তাহার জন্য উচ্চ স্তর হইতে নির্দেশনা জরুরি। কলিকাতা হাইকোর্টে সেই পরিবর্তন সাধিত হউক। কলিকাতা দেশকে পথ দেখাক।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.