ছাত্রনেতার মৃত্যু
সিসিটিভি ধরতে পারেনি চোট কীসে
ঙ্গলবারের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ। কিন্তু আইন অমান্য করে ধৃত এসএফআই ছাত্রনেতা সুদীপ্ত গুপ্ত পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন কী ভাবে তাঁর আঘাত লাগল, সেই ছবি নেই তাতে। কারণ, ঘটনাচক্রে যে জায়গায় আঘাত লাগার ঘটনা ঘটেছে, তা ওই এলাকার চারটি সিসিটিভি-রই নজরদারির আওতার বাইরে।
লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা শুরু থেকেই বলছেন, মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি জেলের সামনে হওয়া ঘটনার ভিডিও ফুটেজ তাঁদের হাতে আছে। বস্তুত, প্রেসিডেন্সি জেলের বাইরে বসানো দু’টি ক্লোজড সার্কিট টিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পুলিশের হাতে ওই রাতেই পৌঁছয়। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, সেই ছবিতে আঘাতের উৎস পরিষ্কার নয়। অর্থাৎ, পুলিশের দাবি মতো ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা লেগেই বাসে ঝুলতে থাকা সুদীপ্তর মৃত্যু হয়েছে, নাকি এসএফআইয়ের দাবি মতো ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা লেগে বাস থেকে ছিটকে পড়ার পরেও পুলিশের লাঠি খেয়ে মারা গিয়েছেন তিনি ছবি দেখে তা বোঝার উপায় নেই।
পুলিশ সূত্রে খবর, সুদীপ্তর ছবি ফুটেজে আছে ঠিকই, কিন্তু সেটা হল গুরুতর জখম সুদীপ্তকে তাঁর সতীর্থেরা ধরাধরি করে পুলিশের গাড়িতে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য তুলছেন। আবার পুলিশের দাবি, তাঁদের হাতে আসা আর একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, একদল এসএফআই সমর্থক এক জন হোমগার্ডকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন।

সুদীপ্ত যে জায়গায় ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা খেয়ে বাস থেকে পড়ে যান, সেই জায়গাটি প্রেসিডেন্সি জেলের গেট থেকে উত্তর দিকে ৫০ ফুটের মধ্যে। কিন্তু বুধবার সকালে প্রেসিডেন্সি জেলের সামনে গিয়ে দেখা যায়, জেলের গেটের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় থাকা চারটি সিসিটিভির অবস্থান যে রকম, তাতে কোনও ভাবেই ওই ল্যাম্পপোস্ট ও তার লাগোয়া জায়গার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া সম্ভব নয়।
জেলের সামনে সিসিটিভির বিন্যাসের চিত্রটা কেমন?
ডি এল খান রোড লাগোয়া থ্যাকারে রোডেই প্রেসিডেন্সি জেলের অবস্থান। ডি এল খান রোড থেকে প্রেসিডেন্সি জেল এর মধ্যে চারটি ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা রয়েছে। ডি এল খান রোড এবং থ্যাকারে রোডের সংযোগস্থলে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেটি ৩৬০ ডিগ্রি, অর্থাৎ ঘূর্ণায়মান। আর একটি ক্যামেরা রয়েছে ডি এল খান রোডেরই ঠিক উল্টো দিকের ফুটপাথে।
অন্য দু’টি ক্যামেরা রয়েছে থ্যাকারে রোডে। তার মধ্যে একটি প্রেসিডেন্সি জেলের মূল গেটের ঠিক সামনে থাকা ল্যাম্পপোস্টের গায়ে। ওই ক্যামেরার মুখ জেলের ফটকের দিকে। অন্যটি রয়েছে রাস্তার মাঝামাঝি জায়গার একটি ল্যাম্পপোস্টে। ওই ক্যামেরার মুখ ডি এল খান রোডের দিকে। ফলে, ওই দুই ল্যাম্পপোস্টের মাঝামাঝি এলাকার ছবি কিন্তু কোনও সিসিটিভিতেই ধরা পড়বে না।
সুদীপ্ত যে ৩৭ নম্বর ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান বলে পুলিশের দাবি, সেটির অবস্থান ক্যামেরা বসানো দু’টি ল্যাম্পপোস্টের মাঝখানে। আবার ডি এল খান রোড থেকে থ্যাকারে রোড ডান দিকে বাঁক খেয়ে কিছুটা ঢুকে যাওয়ার পরে ৩৭ নম্বর ল্যাম্পপোস্টটির অবস্থান। তাই, দু’টি রাস্তার সংযোগস্থলের ঘূর্ণায়মান সিসিটিভি-তেও ধরা পড়েনি ওই ঘটনার কোনও ছবি।
পুলিশ জানায়, প্রেসিডেন্সি জেলের বাইরে নজর রাখতে মাসখানেক আগে পুলিশ ওই চারটি সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, আলিপুর থানার পুলিশ ওই ক্যামেরাগুলির ছবি বিশ্লেষণ করে দেখে।
এক তদন্তকারী অফিসার স্বীকার করেন, “ভিডিও ফুটেজ থেকে বোঝা গেল না, ল্যাম্পপোস্টের ধাক্কায় এসএফআই নেতা সুদীপ্ত গুপ্ত বাস থেকে ছিটকে পড়ার পরে তার উপরে পুলিশ লাঠি মেরেছিল কি না।”
সুদীপ্তর আঘাত লাগা এবং তার অব্যবহিত পরের ছবি নেই ভিডিও ফুটেজে। অগত্যা দাবি ও পাল্টা দাবির মধ্যেই এখনও আটকে রইল তরুণ ছাত্রনেতার মৃত্যু।

 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.