ডাকাবুকো জোসেফকে নিয়ে চিন্তায় বিরোধীরাও
ত বছরে দু’বার রক্ত দিয়েছে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের এসএফআই নেতা জোসেফ আজম হোসেন। একবার তৃণমূলের স্থানীয় নেতা মতিউর রহমানের এক আত্মীয়ের জন্য। আর একবার কংগ্রেস নেতা রশিদ শেখের এক আত্মীয়কে। মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের সেই জোসেফ মঙ্গলবার কলকাতায় বামফ্রন্টের ছাত্র সংগঠনের ডাকে আইন অমান্যে যোগ দিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। বুধবার পর্যন্ত তাঁকে চার বোতল রক্ত দিতে হয়েছে।
খড়গ্রামের ভালকুন্দি গ্রাম এখনও বিশ্বাসই করতে পারছে না ঘটনাটা। ওই গ্রামেরই ছেলে জোসেফ এসএফআইয়ের খড়গ্রাম জোনাল কমিটির সম্পাদক। কিন্তু তাঁকে পছন্দ করেন সকলেই। জয়পুর পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের কানাইলাল ঘোষের কথায়, “দলমত নির্বিশেষে কেউ বিপদে পড়লেই ঝাঁপিয়ে পড়ে ছেলেটা।” জোসেফের মা জোহরা বিবির কথায়, “আমার ছেলে ডাকাবুকো। সেটাই ওর বিপদ ডেকে আনে বারবার।” মা বারণ করেছিল। তা না শুনে বৌদির কাছ থেকে টাকা নিয়ে দলের ডাকে কলকাতায় যান জোসেফ।
বুধবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জোসেফ।—নিজস্ব চিত্র
বুধবার সকালে মেডিক্যাল কলেজের ক্যাজুয়াল্টি বিল্ডিংয়ের তিনতলায় ২০৭ নম্বর শয্যায় ছিলেন জোসেফ। হাসপাতালে শুয়েই সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যুর খবর শুনেছেন। সুদীপ্তকে তিনি চিনতেন। আলিপুরদুয়ারে দলীয় সন্মেলনে ও মাদুরাইয়ে দলের জাতীয় সন্মেলনে সুদীপ্তর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। মঙ্গলবারের ঘটনার বিষয়ে জোসেফ বলেন, “ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে পুলিশ লাঠি চালিয়েছিল। অনেকের গলায় লাঠি চেপে ধরেছিল। সিনেমায় এই রকম দৃশ্য আগে দেখেছি, সামনাসামনি দেখিনি। দমবন্ধ হয়ে আসছিল অনেকের।” বামফ্রন্টের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু এই দিন জোসেফকে দেখতে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। সন্ধ্যার পর অবশ্য এসএফআইয়ের উদ্যোগে জোসেফকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে জোসেফের হাতে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে বুধবার বিকেলে বহরমপুর কলেজের বাংলা অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বছর বাইশের জোসেফের চোখেমুখে ক্লান্তি খুব একটা বোঝা যাচ্ছিল না। বরং উত্তেজনা আর ক্ষোভে ফুটছেন। জানালেন, মঙ্গলবার দুপুরে রানি রাসমনি রোডে আইন অমান্যের সময় পুলিশ তাঁদের ধাক্কা দিয়ে, গাদাগাদি করে একটা বাসে তুলেছিল। তাঁর কথায়, “আমি ডান দিকে একটা জানলার ধারের আসনে বসে পড়েছিলাম। পুলিশ তখনও জানলার বাইরে থেকে লাঠি ঢুকিয়ে মারছিল। হঠাৎ লাঠির ধাক্কায় আমার পাশের জানলার কাচ ভেঙে আমার হাতে ঢুকে যায়। প্রচণ্ড রক্ত বেরোচ্ছিল। আমি জ্ঞান হারানোর আগে বুঝতে পারি বন্ধুরা আমাকে ধরে বাস থেকে নামাচ্ছে।”
জোসেফরা চার ভাইবোন। তাঁর এক ভাই কর্মসূত্রে থাকেন পশ্চিম এশিয়ায়। বরাবরই বামপন্থী পরিবার। বাবা আজাদ হোসেন নবগ্রামের রসুলপুরের পঞ্চায়েত সচিব। তাঁর কথায়, “পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করবে না। বিচারবিভাগীয় বা সিআইডি দিয়ে তদন্ত করতে হবে।” তিনি জানান, ওই ঘটনার পরেও পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কোনও সাহায্য করেনি বলে তাঁরা শুনেছেন।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.