কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন। অন্যান্য ডাকঘরের মতোই। তবে গোলপার্কের ওই ডাকঘরের ভিতরের ছবিটা আর পাঁচটা ডাকঘরের থেকে কিছুটা আলাদা। ওই ডাকঘরে যাঁরা কর্মরত, তাঁরা সকলেই মহিলা। পোস্টমাস্টার থেকে গ্রুপ ডি স্টাফ সকলে। শহরের প্রথম মহিলা পরিচালিত ডাকঘর হিসেবে সম্প্রতি চালু হয়েছে গোলপার্ক ডাকঘরটি। ডাক বিভাগ সূত্রে খবর, মহিলা পরিচালিত এই ডাকঘর রাজ্যে ও কলকাতায় প্রথম। দেশে দ্বিতীয়। মার্চের ৮ তারিখ, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে দিল্লির শাস্ত্রীভবন ডাকঘরটি দেশের প্রথম মহিলা পরিচালিত ডাকঘর হিসেবে চালু হয়েছে।
গোলপার্কের ওই ডাকঘরে গিয়ে দেখা গেল, পাঁচ জন কর্মী কাজ করছেন। পোস্টমাস্টার স্বাতী বসু ভৌমিক বললেন, “এখানে এক জন পোস্টমাস্টার, দু’জন পোস্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট, এক জন সাব স্টাফ ও এক জন গ্রুপ ডি স্টাফ। সকলেই শহরের অন্য ডাকঘর থেকে এখানে এসেছি। কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে না। প্রথম দিনেই মানিয়ে নিয়েছি।” |
এই ডাকঘরের আধিকারিকেরা জানালেন, এটি ‘নন ডেলিভারি পোস্ট অফিস’, অর্থাৎ এখান থেকে চিঠি বিলি হয় না। তা ছাড়া সব কাজই হয়। স্পিড পোস্ট বুকিং থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক মানি অর্ডার, সেভিংসের কাজ, এম আই সি, এন এস সি, রেজিস্ট্রেশন বুকিং সবই করা যাচ্ছে। ডাকঘরটি সম্পূর্ণ কম্পিউটার চালিত।
লম্বা লাইন সামলাতে সামলাতে এক পোস্টাল অ্যাসিস্ট্যান্ট তনুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “আমি আগে রাসবিহারী পোস্ট অফিসে ছিলাম। এখানে নতুন পরিবেশে কাজ শুরু করেছি। কাজটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হলেও ভাল লাগছে।” এই ডাকঘরের একমাত্র পুরনো কর্মী, গ্রুপ ডি স্টাফ মিনতি বসু বলেন, “পরিবেশ পাল্টে গেলেও কাজ করতে ভাল লাগছে।”
এই মহিলা পরিচালিত ডাকঘরের উদ্বোধনের সময়ে উপস্থিত ছিলেন চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল (ওয়েস্ট বেঙ্গল) জে পাণ্ডা, পোস্টমাস্টার জেনারেল সুব্রত দাস, সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট (সাউথ কলকাতা ডিভিশন) অশোক পাল। ছিলেন সেন্ট্রাল এক্সাইজ কমিশনার কামেশ্বরী সুব্রহ্মণ্যম। অশোকবাবু বলেন, “দিল্লির ডাইরেক্টরেটের নির্দেশেই
এই ডাকঘর চালু হল। এর কাজের রিপোর্ট দেখে পরে আরও এমন ডাকঘর চালু করা যায় কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অশোকবাবু জানান, ভবিষ্যতে ডেলিভারি পোস্ট অফিস অর্থাৎ চিঠি বিলি করার ডাকঘরও মহিলা পরিচালিত করা যায় কি না সে নিয়ে ভাবনা-চিন্তা হবে। চিঠি বিলি করার জন্য মহিলা পিওন হাতে গোনা। সেই সংখ্যা বাড়লে এই ধরনের পোস্ট অফিসের কথা ভাবা হবে। |