|
|
|
|
|
|
|
আমি গৃহবধূ। বয়স ৬০ বছরের বেশি। স্বামী মারা গিয়েছেন। ব্যাঙ্কে তাঁর নামে রাখা টাকা আর কয়েক দিনের মধ্যে আমার হাতে আসবে। যার পরিমাণ প্রায় ১৭ লক্ষ। ওই টাকা আমার নামে স্থায়ী আমানতে লগ্নি করতে চাই। যে বাৎসরিক সুদ পাব, তা কি করযোগ্য? যদি সুদের পরিমাণ আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা হয়, তা হলে তার জন্য কত কর দিতে হবে? আমার অন্য কোনও আয় নেই।
ইন্দু রায়চৌধুরী, হালিশহর
আপনি প্রবীণ নাগরিক ও অন্য কোনও উৎস থেকে আয় নেই। তাই স্থায়ী আমানতের সুদ থেকে প্রাপ্ত টাকাই আপনার বাৎসরিক আয় হিসেবে গণ্য হবে। সে ক্ষেত্রে ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর কর ছাড় পাবেন। অর্থাৎ ওই টাকায় কোনও কর দিতে হবে না। তার পর আরও বেশি টাকা সুদ পেলে করছাড় যুক্ত কোনও প্রকল্পে লগ্নি করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আয়কর আইনের ৮০সি ধারায় ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করছাড় পাবেন। আর তা না করলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে ১০% কর দিতে হবে।
আমার বয়স ২২ বছর। গ্রামীণ ক্ষেত্রে পশুপালনের উপর একটি প্রোজেক্ট করতে চাই। এ জন্য অন্যান্য উপকরণ পেলেও, পর্যাপ্ত মূলধনের অভাবে প্রোজেক্টটি শুরু করতে পারছি না। দরকার ১০ লক্ষ টাকা।
১) কোথায় টাকা পাওয়া যাবে?
২) টাকা পেতে কী কী প্রয়োজন হবে? প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি কোথায় পাব? ৩) প্রোজক্টটির উপর কোন বিমা করা যায়? ৪) দক্ষতা বাড়াতে রাজ্য বা কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থাকলে, তার ঠিকানা জানাবেন।
শুকদেব ঘোষ, কলকাতা
১) যে কোনও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক বা গ্রামীণ ব্যাঙ্কে (যা আপনার প্রকল্প এলাকার কাছাকাছি) ঋণের জন্য আবেদন করুন।
২) প্রথমত, একটা পূর্ণাঙ্গ প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করুন। যেখানে আপনার প্রকল্প পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য থাকবে। যেমন ব্যবসার কাঁচামাল, এ ক্ষেত্রে পশু (লাইভস্টক) কোথা থেকে আসবে ও কী ভাবে বিক্রি করা হবে, ব্যবসার সম্ভাব্য লাভ-ক্ষতি, সে সবের পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ কত দিনে ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে মাংস বা দুধ উৎপাদন, দু’ধরনের ব্যবসার সুযোগ আছে। একটা করবেন, নাকি দুটোই করবেন, সেই অনুযায়ী, প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করতে হবে।
এই ব্যবসা করতে হলে কিছু জমি লাগবে। সেই জমি চিহ্নিতকরণ ও তার পজেশন (ব্যবহারের অনুমতিপত্র) এবং জমি পাওয়ার পরে ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি আগে জোগাড় করতে হবে। সে সব পাওয়ার পরেই ঋণের জন্য আবেদন করা যাবে।
৩) পশুর বিমা হয়। যা সাধারণ বিমা সংস্থার (জেনারেল ইনশিওরেন্স) কাছেই মেলে।
৪) এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের পশুপালন দফতরে যোগাযোগ করতে পারেন। তারা এ ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে।
কলকাতায় আমাদের পৈতৃক বাড়ির (যৌথ সম্পত্তি) কোনও রকম উইল না-করেই বাবা, কাকারা মারা গিয়েছেন। এখন বর্তমানে ওই বাড়ির উত্তরাধিকারী প্রায় ২৩ জন। আমাদের নামে মিউটেশন করে মালিকানার স্বত্ব পেতে এবং কেএমসি-র বাকি কর মিটিয়ে দিতে চাই। উত্তরাধিকারীদের সকলেরই বয়স প্রায় ৬০ থেকে ৮৭ বছর। এর মধ্যে এক জন সম্পূর্ণ অন্ধ এবং এক জনের মস্তিষ্ক বিকৃত ও বহু বছর যাবৎ শয্যাশায়ী। মিউটেশনের জন্য প্রত্যেকের সই ও পরিচয়পত্র দরকার। অথচ ওই দু’জনের মিউটেশন বা অন্যান্য কাগজপত্রে সই করার সাধ্য বা ক্ষমতা নেই। এই অবস্থায় সমস্যার সমাধান করব কী ভাবে? দু’জন ছাড়া বাকিরা সকলেই সই করতে সক্ষম।
রাজীব চট্টোপাধ্যায়, বাগুইআটি
এই সমস্ত ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী অন্ধ বা মস্তিষ্ক বিকৃত ব্যক্তিদের কোনও স্বাভাবিক অভিভাবক আছেন বলে ধরে নেওয়া হয়। তাঁরাই ওই ব্যক্তিদের হয়ে সই করতে পারেন। ধরা যাক, কোনও নিকটাত্মীয় স্বাভাবিক অভিভাবক। কিন্তু তেমন কেউ না-থাকলে অভিভাবকত্ব পাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করতে হবে। সেটা তাঁদের কোনও নিকটাত্মীয় বা বন্ধুবান্ধব হতে পারেন, আবার প্রতিবেশীও হতে পারেন। অভিভাবকের দায়িত্ব যিনি পাবেন, তাঁকে কিন্তু আইনি ভাবে বেশ কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবেই এঁদের হয়ে এই ধরনের কোনও কাগজে সই করতে পারবেন তিনি।
প্রথম সারির উত্তরাধিকারীরা কখন তাঁদের উত্তরাধিকার স্বত্ব থেকে বঞ্চিত হবেন? পুত্রবধূ ও তাঁর ভাই-বোনেরা কি প্রথম সারির উত্তরাধিকারীর মধ্যে পড়েন? এ ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তি উইল করে গেলে বিষয়টি কি সেই অনুযায়ীই কার্যকর হবে?
বিভাস কুমার, সল্টলেক
১) সম্পত্তির মালিক উইল, দানপত্র ইত্যাদির মাধ্যমে কাউকে উত্তরাধিকারী ঘোষণা না করে মারা গেলে প্রথম সারির উত্তরাধিকারীরা সব সময়েই সেই সম্পত্তির মালিকানার হকদার হওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। তবে এটা হতে পারে যে, সম্পত্তির মালিক তাঁর ইচ্ছায় প্রথম সারির উত্তরাধিকারী ছাড়া অন্য কাউকে উইল, দানপত্র ইত্যাদির মাধ্যমে সম্পত্তি দিয়ে গেলেন। তখন তাতে প্রথম সারির উত্তরাধিকারীদের কোনও অধিকার থাকবে না।
২) পুত্রবধূ ও তাঁর ভাই-বোন, কেউই প্রথম সারির উত্তরাধিকারী হিসেবে স্বীকৃত নন। হিন্দু উত্তরাধিকার আইন, ১৯৫৬-র তফসিলে প্রথম ও দ্বিতীয় সারির উত্তরাধিকারীদের তালিকায় বলা হয়েছে, পুত্র মারা গেলে তবেই বিধবা পুত্রবধূ প্রথম সারির উত্তরাধিকারী বলে স্বীকৃতি পাবেন।
৩) মানুষের সর্বশেষ উইল বা ইচ্ছাপত্র একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি। যে-কোনও মানুষই তাঁর সম্পত্তি নিজের পছন্দের কাউকে উইলের মাধ্যমে দান করতে পারেন। উইলকর্তার মৃত্যুর পরেই শুধুমাত্র সেই ইচ্ছে কার্যকর হবে। |
(আইনি পরামর্শ জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়)
|
|
|
|
|
|