নিজস্ব সংবাদদাতা • খয়রাশোল |
আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল ১৫টি খড়ের ছাউনি বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আরও ৯টি বাড়ি। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোলের লোকপুর পঞ্চায়েতের আমলাকুড়ি গ্রামের গোয়ালা পাড়ায়। প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারা এবং পরে দমকলের দু’টি ইঞ্জিনের তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। খয়রাশোলের বিডিও মহম্মদ ইসরার বলেন, “অপাতত কিছু ত্রিপল, কম্বল ও চাদর ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে দেওয়া হয়েছে।”
ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা গেল, তখনও ধোঁয়া উঠছে খড়ের পালুই, বাড়ির চাল ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গৃহস্থালির বিভিন্ন জিনিস থেকে। দমকল কর্মী ও বাসিন্দারা সমানে চেষ্টা চালাচ্ছেন আগুন নেভানোর। |
খয়রাশোলে আগুন নেভাচ্ছে দমকল। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত। |
সেই সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে পোড়া গন্ধ, কান্নার আওয়াজ। জল কাদায় থিকথিক করছে চারিদিক। যদি কিছু বেঁচে গিয়ে থাকে, পোড়া খড় ও পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্রে মধ্যেই কেউ কেউ তা খুঁজে চলেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বিডিও মদম্মদ ইসরারও।
কী ভাবে আগুন লাগল?
স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, আগুন লাগার সঠিক কারণ জানা নেই। তবে ওই পাড়ার সঞ্জয় গোপদের পারিবারিক খামারেই প্রথমে লেগেছিল আগুন। সেখান থেকেই দেখতে দেখতে আগুন ছাড়ায় আশপাশের বাড়িগুলিতে। মূলত কৃষিজীবী পরিবারগুলিতে তখন কেউ বা রান্না করছেন, কেউ বা রান্না সেরে পুকুরে স্নানে গিয়েছেন। মোহন গোপ, গোরাচাঁদ গোপ, জ্যোতি গোপরা বলেন, “নেহাত কিছু বাড়িতে পাম্প সেট ছিল এবং দিনের বেলা হওয়ায় সকলে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগাতে পেরেছেন। না হলে এই বাড়িগুলির পাশাপাশি গোটা গ্রাম পুড়ে যেত।” বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মাস দু’য়েকের মধ্যে তিন বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটল তাঁদের গ্রামে। তবে আগের বারের থেকে এ বার আগুনের দাপট অনেক বেশি ছিল। গ্রামের এতবড় দুর্ঘটনায় মন খারাপ হয়েছে গোটা গ্রামেরই। এ দিন তাই গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতেই পাত পড়েনি। বধূ মরু গোপ, প্রমীলা গোপরা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “স্নানে গিয়েছিলাম। খবর পেয়ে বাড়িতে আসতে না আসতেই সব পুড়ে গেল পরনের কাপড়টুকু ছাড়া।” এলাকার নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য নীরোজ বাগদি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে দিয়ে ব্লকে আবেদন জানানোর ব্যবস্থা করছি।” |