‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ এক যুবককে সামলাতে গিয়ে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হল রেল পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের। সোমবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি থানার ডালখোলায় ঘটনাটি ঘটেছে।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, মৃত পুলিশ কর্মীর নাম জনার্দন রবি দাস (৫৬)। বাড়ি ইটাহারের থানাপাড়া এলাকাতে। এ দিন রাত ৯টা নাগাদ ডাউন কাটিহার শিলিগুড়ি স্পেশাল প্যাসেঞ্জার ট্রেন ডালখোলা স্টেশনে দাঁড়ালে এক ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ যুবক ট্রেনে উঠে যাত্রীদের বিরক্ত করতে শুরু করে। তাঁকে সামলাতে গিয়েছিলেন স্টেশনে কর্তব্যরত রেল পুলিশের ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর। ট্রেনে উঠে তাকে ধরতে গেলে আচমকা ওই যুবক ধাক্কা দেয়। তা সামলে নিলেও ওই যুবক মুহূর্তেই পুলিশ কর্মীকে জড়িয়ে ধরে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেয়। ট্রেন থেকে পাশের লাইনে পড়ে যান ওই রেল পুলিশ কর্মী। প্রথমে ডালখোলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, পরে রায়গঞ্জ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিনি মারা যান। পাগল ওই যুবক গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। জনার্দনবাবুর মৃত্যুতে পুলিশ মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মাত্র সাত দিন আগেই ডালখোলা এলাকায় তিনি কাজে যোগ দিয়েছিলেন। দোলের সময় পাঞ্জিপাড়া এলাকাতেও কাজ করেন। জনার্দনবাবুর আদি বাড়ি মালদহের মানিকচকের লস্করপুরে। কর্মসূত্রে ইটাহারে থাকায় সেখানেই বাড়ি করেন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী দেবীদেবী ছাড়াও দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ে ফাল্গুনি কয়েক বছর আগে ইটাহার মেঘনাদ সাহা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। মেজ মেয়ে দীপা, ছোট ছেলে মিঠু কলেজের স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করেন। এ দিন দুপুর ২টা নাগাদ জনার্দনবাবুর মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর পরিবারের লোক, প্রতিবেশীরাও। মিশুকে, শান্ত প্রকৃতির মানুষ বলেই তাঁকে সকলে জানেন। বিভিন্ন ছুটিতে বাড়িতে ফিরলে গরিবদের সাহায্য করতেন। স্ত্রী দেবীদেবী এ দিন বলেন, “স্বামীর আয়ে সংসার, ছেলেমেয়ের পড়াশোনা চলত। দুর্ঘটনায় স্বামীর অকাল মৃত্যু হওয়ায় কী ভাবে সংসার চলবে বুঝতে পারছি না। সরকার ক্ষতিপূরণ আর এই পরিবারের এক জনের চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা না করলে সংসারটা ভেসে যাবে।” |