পুলিশের মারে জখম যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। হতের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জে। ‘মানব’ নামে আসানসোলের এক মানবাধিকার সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ওই নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার ম্যানেজিং ট্রাস্টি অমিত্রসূদন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “কয়েক দিন আগে রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়ে নিহত যুবকের পরিবারকে এই টাকা ১৫ মে-র মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।” দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য ক্ষতিপূরণ বিষয়ক চিঠি পাননি বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “এমন নির্দেশ পাইনি। ওই মামলাটির ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে বলব।”
ঘটনাটি ঘটে গত ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের বাসিন্দা নিহত যুবকের নাম রাজু রায়। তিনি দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করতেন। পুজোর আগে জমানো মজুরির কয়েক হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন রাজু। ওই দিন রাতে বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ডে নেমে রাজু কুমারগঞ্জের বাড়িতে যাওয়ার বাস না পেয়ে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। সে সময় বালুরঘাট থানার এএসআই অভিযুক্ত প্রশান্ত বর্মন তাঁকে থানায় ধরে নিয়ে যান এবং লক আপে ঢুকিয়ে প্রচণ্ড মারধর করে সব টাকা কেড়ে নেন বলে অভিযোগ। পর দিন ২৪ সেপ্টেম্বর আদালত থেকে জামিন পেয়ে সন্ধ্যা নাগাদ রাজু ছাড়া পেয়ে বালুরঘাট থানায় গিয়ে কেড়ে নেওয়া টাকা ফেরত চান। মিথ্যা অভিযোগ করে বদনাম করার চেষ্টার অভিযোগ করে রাজুকে অভিযুক্ত এএসআই বেধড়ক পেটান বলে অভিযোগ। মারের চোটে রাজু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়। রাজুর অসুস্থতার খবরে কুমারগঞ্জ থেকে বাবা দ্বিজেন রায় বালুরঘাটে যান। ফেরার সময়ে বাসে রাজু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পর দিন, ২৬ সেপ্টেম্বর রাজুর মৃত্যু হয়। পুলিশের মারে রাজুর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে বাবা দ্বিজেনবাবু থানায় অভিযোগ করেন। তদন্তে অভিযুক্ত থানার এএসআই প্রশান্ত বর্মনের বিরুদ্ধে রাজু হত্যার দায়ে ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু হয়। অভিযুক্ত প্রশান্তবাবু ফেরার আছেন। |