বন্যার জলে ভেসে আসা বালির পুরু আস্তরণে তলিয়ে যায় বিঘার পর বিঘা জমি। উর্বর মাঠ রুক্ষ মরুভূমির চেহার নেয়। চাষিরা দিনমজুরি শুরু করেন। ডুয়ার্সের শামুকতলা পঞ্চায়েত এলাকার জয়ন্তী নদী সংলগ্ন আদিবাসী মহল্লা সম্বলপুর এলাকার ওই জমি তাঁরা ফিরে পাবেন, সেখানে আগের মতো ফসল হবে স্বপ্নেও ভাবেনি কেউ। কিন্তু তা করে সাড়া ফেলে দিয়েছে ভূমি সংরক্ষণ দফতর (কৃষি)। জমি জুড়ে এখন সবুজের আয়োজন।
১৯৯৩ সালের বন্যায় সম্বলপুর গ্রামের প্রায় দুশো বিঘা জমি কয়েক ফুট বালিতে তলিয়ে যায়। জল ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়। অন্তত পঞ্চাশটি আদিবাসী চাষি পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। অনেক চেষ্টা করে তাঁরা শস্য ফলাতে ব্যর্থ হয়ে দিনমজুরির কাজ শুরু করে। তিন মাস আগে ঘটনার খবর পেয়ে এলাকা ঘুরে দেখেন ভূমি সংরক্ষণ (কৃষি) দফতরের কর্তারা। গত দু’মাস ধরে ১৩৫ জন শ্রমিক লাগিয়ে জমি উদ্ধার করেন তাঁরা। শুরু হয়েছে নানা প্রজাতির ডালের চাষ। ভূমি সংরক্ষণ দফতরের জেলা সহকারী অধিকর্তা বৃন্দাবনচন্দ্র রায় বলেন, “৬ লক্ষ টাকা খরচ করে জমি উদ্ধার করা হয়।”
ভূমি সংরক্ষণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেচের সুবিধায় এলাকায় দুটি কুয়ো এবং কয়েকটি পুকুর খনন করা হয়েছে। পুকুরে বৃষ্টির জল ধরে রাখা হবে। দীর্ঘ ১৯ বছর পরে আগের মতো চাষের জমি ফিরে পেয়ে চাষিরা খুশি। তাঁদের অনেকে দিনমজুরি ছেড়ে আবার জমি চাষ শুরু করেছেন। স্থানীয় চাষি বেঞ্জামিন মারান্ডি বলেন, “দীর্ঘ দিন থেকে জমিতে চাষের কাজ বন্ধ। ভাত জোটাতে বাইরে দিনমজুরি শুরু করেছিলাম। ভূমি সংরক্ষণ জমি ফিরিয়ে দেওয়ায় দিনমজুরি ছেড়ে দিয়েছি।” আলিপুরদুয়ার-২ ব্লক কৃষি আধিকারিক অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জমিতে নানা প্রজাতির ডাল চাষ করে ভাল ফলন মিলেছে। এখন পাট চাষে প্রস্তুতি চলছে।” শামুকতলা পঞ্চায়েতের প্রধান রাহাবিয়াম কিস্কু জানান, জমি উর্বরতা ফিরে পাওয়ায় বাসিন্দাদের মুখে হাসি ফুটেছে। |