বাগান কর্তৃপক্ষ অনুপস্থিত থাকায় খুলল না বীরপাড়ার বান্দাপানি চা বাগান। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম কমিশনারের উপস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। বৈঠকের মাধ্যমে বাগান খোলার আশায় ছিলেন শ্রমিকেরা। কিন্তু সোমবার বীরপাড়ার অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের কাছে বাগান কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা আসতে পারবেন না। তাই ভেস্তে গেল এদিনের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক।
গত বছরের পুজোর বোনাস দেওয়া হয়নি শ্রমিকদের। সেই পাওনা টাকার দাবিতেই সরব বাগানের শ্রমিকেরা। ১২ নভেম্বর বোনাসের দাবি জানানোয় বাগান বন্ধ করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। এক মাস পর আলোচনায় বাগান খুললেও বকেয়া মেলেনি। বোনাসের দাবিতে ফের ১৮ মার্চ থেকে আমরণ অনশনে বসেন বাগানের শ্রমিকেরা। গত ২৩ মার্চ কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে যান। এর পর থেকেই কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে বাগানের।
পুজোর বোনাসের দাবি বাগান বন্ধ থাকাকালীন তাঁদের মজুরি দাবি করেন বাগানের শ্রমিকেরা। এই বাগানে বর্তমানে মোট ১২২৩ জন শ্রমিক রয়েছে। বাগান নিয়ে বৈঠকে মালিক পক্ষ না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আর এস পি শ্রমিক সংগঠনের নেতা গোপাল প্রধান বলেন, “শ্রমিকেরা অভাবে দিন কাটাচ্ছেন। বাগান কর্তৃপক্ষের উচিত পাওনা মিটিয়ে দ্রুত বাগান খুলে দেওয়া।” এ বিষয়ে বাগানের প্রাক্তন কর্মী এস তিরকি জানান, এ মাসের টাকা ৭ মার্চ দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেননি বাগান কর্তৃপক্ষ। বাগান খোলাতে পরবর্তী বৈঠক দ্রুত ডাকা হবে বলে জানান যুগ্ম শ্রম আধিকারিক মহম্মদ রিজওয়ান।
আজ বুধবার মধু চা বাগান খোলার বিষয়ে ত্রিপাক্ষিক বেঠক রয়েছে শিলিগুড়িতে। এ ছাড়াও রয়েছে মোহরগাঁও-গুলমা চাবাগান নিয়ে বৈঠক। এই বাগানে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কয়েকজনকে সাসপেন্ড করেছে বাগান কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তরাই ডুয়ার্স মিলিয়ে মোট ৬ টি বাগান বন্ধ হয়ে রয়েছে। এই বাগানগুলির মধ্যে রয়েছে বান্দাপানি, মধু বাগান, সুরেন্দ্রনগর, দল মোড় ঢেকলাপাড়া। বন্ধ রয়েছে রিংটং চা বাগান। দ্রুত বাগান গুলি খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান যুগ্ম শ্রম আধিকারিক মহম্মদ রিজওয়ান। তরাই-ডুয়ার্সের মোট ২৭৮টি বাগানের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য গত অক্টোবর মাস থেকে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছিল শ্রম দফতর। ইতিমধ্যে সেই কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান শ্রম আধিকারিক। এই রিপোর্ট পাঠানো হবে রাজ্য সরকারের কাছে। বাগানের জমি বাড়ি শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা-সহ ৩৫০টি বিষয়ে সমীক্ষা হয়েছে। |