বাজারে দাম না মেলায় সমস্যায় পড়েছেন পুরুলিয়া জেলার শশা চাষিরা। স্থানীয় বাজারে তো নয়ই, গাড়ি ভাড়া করে দূরের বাজারে শশা নিয়ে গিয়েও অনেককে ফেরত নিয়ে আসতে হচ্ছে। কৃষি বিপণন দফতরের জেলা আধিকারিক দীপঙ্কর পণ্ডিতের মতে, “এক সঙ্গে জেলার বিভিন্ন এলাকার শশা মাঠ থেকে ওঠায় দাম পড়ে গিয়েছে। দাম ধরে রাখতে বিভিন্ন সময়ে শশা চাষের জন্য প্রচার করা হবে।”
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার মানবাজার ১ ও ২ ব্লক, বান্দোয়ান, বরাবাজার, বলরামপুর, বাঘমুণ্ডি এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে টমেটো, শশা, তরমুজের চাষ উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। চাষিরাও ভাল দাম পাচ্ছিলেন। কিন্তু এ বার দাম পড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে তাঁরা। মানবাজার ২ ব্লকের মুরগাডি, রাধামোহনপুর, পাথরডি প্রভৃতি গ্রামে চলতি মরশুমে ব্যাপক শশা চাষ হয়েছে। রাধামোহনপুর গ্রামের কৃত্তিবাস মাহাতো, মুরগাডি গ্রামের হেমন্ত টুডু, কার্তিক মাহাতোরা বলেন, “মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে শশা ও তরমুজ চাষ করেছি। ফাল্গুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শশা উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এত শশার দাম মিলছে না। তাই গাড়ি ভাড়া করে বলরামপুরের বাজারে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানেও আড়তদারেরা শশা নিতে রাজি হননি।” চাষিরা জানান, তাঁরা দু’টাকা কিলোগ্রাম দরেও বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও আড়তদারেরা রাজি হননি। অথচ গত বছরও প্রতি কিলোগ্রাম শশা ৬-৮ টাকা দরে তাঁরা বিক্রি করেছেন। আড়তদারদের যুক্তি, গত কয়েক দিনে বলরামপুরের বাজারে এত বেশি পরিমাণ শশা এসেছে যে তা বাইরে পাঠানোও যাচ্ছে না। আবার সংরক্ষণ করার ব্যবস্থাও নেই। তাই আর শশা কিনতে তাঁরা চাইছেন না।
মানবাজার ২ ব্লকের কৃষি আধিকারিক সব্যসাচী দাস বলেন, “এই সমস্যার কথা জানতাম না। চাষিরাও আমাদের কাছে এসে সমস্যার কথা জানাননি। দেখা যাক কী করা যায়।” কৃষি বিপণন আধিকারিক দীপঙ্করবাবু জানান, এই জেলায় সব্জি সংরক্ষণের হিমঘরও নেই। ফলে চাষিদের এই সমস্যা কী ভাবে কাটানো যাবে তার সদুত্তরও তাঁর কাছে মেলেনি। |