দফায় দফায় লোডশেডিং আর লো-ভোল্টেজের সমস্যায় জেরবার সালারবাসী। অভিযোগ, মাস দেড়েক ধরে বিদ্যুৎ ঘাটতি চলছে। সারা দিনে ৫-৭ ঘণ্টা অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে এলাকা। ফলে মার খাচ্ছে সান্ধ্যকালীন ব্যবসা। সমস্যা পড়ুয়াদেরও। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের কর্তারা।
যদিও বিদ্যুৎ বণ্টনের কান্দি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নাসিরুদ্দিন শেখ বলেন, “এই সমস্যা শুধু সালারের নয়, মহকুমা জুড়েই একই সমস্যা। তবে সালারে তা প্রকট। একটি মাত্র সাব-স্টেশন, সেখান থেকে সালারের পাশাপাশি ভরতপুরের অধিকাংশ এলাকায়ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এতেই সমস্যা।” তাঁর সংযোজন, “ভরতপুরের জন্য একটি পৃথক সাব-স্টেশন জরুরি। বছর চারেক আগে অনুমোদন মিললেও তা আটকে রয়েছে জমিজটে।”
দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের দরুণ ব্যবসা মার খাচ্ছে। সন্ধ্যার পর চৈত্র সেলের বাজার জমতে না জমতেই আচমকা ঝপ করে লোডশেডিং! বাজারে আসা ক্রেতা থেকে বিক্রেতা সকলেই সমস্বরে আর্তনাদ করে ওঠেন‘এই যা!’ নিমেষের মধ্যেই বাজার অন্ধকার। একবার লোডশেডিং হলে ৪ ঘণ্টার আগে আর বিদ্যুতের দেখা মেলে না। ফলে সন্ধের চৈত্র সেলের বাজার পণ্ড।
সালারের মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম জস্তগির এলান বলেন, “লোডশেডিং তো হচ্ছে। তবে যেটুকু সময় বিদ্যুৎ থাকছে, তারও উপযুক্ত ভোল্টেজ থাকছে না। এতে সন্ধের পরই বাজার ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। বহু বার বিদ্যুৎ বিভাগে যোগাযোগ করেও কোনও সুরাহা হয়নি। লাগাতার এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলতে থাকলে ব্যবসায়ীদের বড় ক্ষতি হবে।” একই অবস্থা এলাকার পড়ুয়াদেরও। রবিউল আলম, সুজিত চৌধুরীর মতো পড়ুয়াদের অভিযোগ, “বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সন্ধ্যার পর পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর যে-ভোল্টেজ থাকে, তাতেও পড়াশোনা করা যায় না!’ ওই থানার কাগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “ভরতপুরে সাব স্টেশন তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত সমস্যা চলতেই থাকবে। এ বিষয়ে বহু বার আন্দোলন করা হয়েছে, কিন্তু বিগত ও বর্তমান কোনও সরকারেরই হেলদোল নেই।”
ভরতপুরে সাব স্টেশন তৈরির জন্য দরকার সাকুল্যে বিঘা চারেক জমি। কিন্তু ওই জমির অভাব মেটাতে স্থানীয় বিধায়কও উদাসীন বলে অভিযোগ। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ভরতপুরের বিধায়ক আরএসপি-র ঈদ মোহম্মদ বলেন, “বিদ্যুৎ বিভ্রাট এলাকার বড় সমস্যা। বিষয়টি বিদ্যুৎমন্ত্রী থেকে চিফ ইঞ্জিনিয়ারসকলকেই জানানো হয়েছে।” বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের কর্তাব্যক্তিদের দাবি, ফি বছর বোরো চাষের মরসুমেই বিদ্যুতের সমস্যা হয়। কারণ, এই সময় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ চালিত সেচ-পাম্প চলে। ফলে বিদ্যুতের প্রয়োজন বেড়ে যায়।
বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের কান্দি মহকুমার আধিকারিক নাসিরউদ্দিন শেখ বলেন, “এপ্রিল মাসটা এমনই চলবে। তবে ভোল্টেজের উন্নতি করার চেষ্টা চলছে। আশা করি, সমস্যার সমাধান হবে।” |