চ্যাম্পিয়ন। এই তকমাটাই তো দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে বেশ কয়েক গুণ। চাপও বাড়িয়েছে। আসলে এক নম্বর জায়গায় পৌঁছনো যতটা কঠিন, সেখানে টিকে থাকাটা আরও অনেক বেশি কঠিন। তাই এ বার আইপিএলে আমাদের পথটা যে গত বারের চেয়ে অনেক দুর্গম, এই নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই।
২০০৯-এ যে বার টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে পৌঁছলাম, তখন জানতাম জায়গাটা ধরে রাখা মোটেই সহজ হবে না। কিন্তু ঠিক কতটা শক্ত, তা বোধহয় তখন জানা ছিল না। ফের শীর্ষে পৌঁছতে আমাদের লেগে গেল আরও চার-চারটে বছর! এ বার আমাদের লক্ষ্য, সবার ওপরে আগের বারের চেয়ে বেশি সময় থাকা। কিন্তু সে কি মুখের কথা? প্রতি ম্যাচে নিজেদের উজাড় করে দিতে হবে।
আইপিএলেও ব্যাপারটা প্রায় একই রকম। গত বার আমরা যতটা ভাল পারফরম্যান্স করে খেতাব জিতেছিলাম, এ বার তার চেয়েও ভাল পারফর্ম করে খেতাব ধরে রাখতে হবে। না পারলেই হোঁচট। অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন, গত বারের মতো খেললেই এ বারও আমরা সেরার শিরোপা মাথায় তুলতে পারি। দুঃখিত, আমি তাঁদের সঙ্গে একমত হতে পারছি না। গত বারের মতো নয়, এ বারও চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে গত বারের চেয়েও ভাল খেলতে হবে। কারণ, এ বার সবাই আমাদের বিরুদ্ধে আরও কঠিন দল নামাবে। প্রতিটা দল তাদের গত বারের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে খেলতে নামবে। আমাদের শক্তি বা দুর্বলতাও এখন অনেকের মুখস্থ। তাই প্রতিটি ম্যাচ ধরে ধরে এগোনোই ভাল। নিজেদের খেলাও অনেক পাল্টাতে হবে এ বার। প্রতিটি ম্যাচ আমাদের একেকটা নতুন যুদ্ধ।
নতুন যুদ্ধ ছাড়া আর কী? গ্যারি কার্স্টেন আমাকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে দলে রাখেনি। বলেছে, কালিসহীন দক্ষিণ আফ্রিকা দল তৈরি করতে চায় সে। ওর এই কথা শুনে মনে হচ্ছিল, তা হলে কি ৭৫ বছরের বুড়ো হয়ে গেলাম? কিন্তু অত সহজে আমার হাত থেকে নিস্তার পাবে গ্যারি? ও জানে কি না জানি না, আমি কিন্তু ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজটা না খেলায় অবশ্য বেশ তরতাজা হয়ে আইপিএলে খেলতে নামছি। মাঝের এই সময়টায় মার্ক বাউচারের সঙ্গে চুটিয়ে গল্ফ খেলেছি। ওর গণ্ডার সংরক্ষণ প্রকল্প দেখতে বেশ কয়েক দিন জঙ্গলেও কাটিয়ে এলাম। শিঙের জন্য ওদের যথেচ্ছভাবে হত্যা করাটা আমার বরাবরই জঘন্য লাগে। তবে বাউচারদের প্রকল্পে বিপন্ন গণ্ডারদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা দেখে বেশ স্বস্তি পেলাম।
বুধবার নিশ্চয়ই প্লে অফে হারের বদলা নিতে নামবে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। তবে প্রথম ম্যাচে নামার আগেই অবশ্য দিল্লি কেপি ও জেসির মতো দু’জন ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছে। শুনলাম বীরেন্দ্র সহবাগও প্রথম ম্যাচে অনিশ্চিত। তবু আমার মনে হয়, ওরা এ বার শুরু থেকেই ঝাঁপাবে।
আমার ধারণা, এ বার আইপিএলের ভাগ্য নির্ভর করছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের ওপরই। এই ফর্ম্যাটে এক জন ক্রিকেটার একটা ম্যাচ জেতাতে পারে ঠিকই, কিন্তু এক জন গোটা টুর্নামেন্ট জেতাতে পারে না। আগামী দু’মাস আমাদের এই কথা মাথায় রাখতে হবে। |