|
|
|
|
মনে করে ত্রিপুরা সিপিএম |
শহুরে ভোটারদের মধ্যে প্রভাব বাড়েনি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা |
শহুরে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের কাছে এখনও সিপিএম সে ভাবে পৌঁছতে পারেনি বলে আত্মসমালোচনা করল ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি। রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করা হয়। আজ দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর বলেন, “শহর এবং শহরতলির উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে সিপিএমের রাজনৈতিক আন্দোলনের গুরুত্ব পৌঁছে দেওয়া যায়নি। সে কারণেই শহরাঞ্চলের মানুষ এ বারের ভোটেও সিপিএমকে প্রত্যাখ্যান করেছে।” তাঁর মতে, “মধ্যবিত্ত বহু মানুষের মধ্যে উদার আর্থিক নীতির প্রলোভনে একটা দোদুল্যমানতা তৈরি হয়েছে। সেই কারণে সিপিএমের মতাদর্শ গত সংগ্রাম আরও তীব্রতর করার উপর রাজ্য কমিটি অধিক গুরুত্ব দিয়েছে।’’
রাজ্যের একাদশ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বর্ণনা করে বিজনবাবু বলেন, ‘‘বিরোধী দলের নানা ষড়যন্ত্র, বিশেষ করে দেশের উদার আর্থিক নীতির বিভিন্ন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ত্রিপুরার নির্বাচকমন্ডলী সার্বিত ভাবে বামফ্রন্টের উপর আস্থা স্থাপন করেছেন। সপ্তম বারের জন্য বামফ্রন্ট সরকার গড়তে সাহায্য করেছেন।’’ তিনি বলেন, ২০০৮ সালের তুলনায় বামফ্রন্টের ১.১৪ শতাংশ ভোট বেড়েছে। মোট ভোট বেড়েছে ১ লক্ষ ৮৯ হাজার। অন্য দিকে, কংগ্রেস-জোটের ভোট কমেছে .২২ শতাংশ। কিন্তু সংখ্যার বিচারে তাদের ভোট বেড়েছে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার। বিজনবাবু জানান, উন্নয়নের কাজ বামফ্রন্ট সরকার সারা বছর ধরে করে চলেছে। বাম গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলি বছরভর মানুষের মধ্যে কাজ করছে। রাজ্যে শান্তির নিরাপত্তা, দরিদ্র মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা দিয়েছে রাজ্য। তাতে বামফ্রন্টের ভোটের হার আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল বলে দল মনে করছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক উদার নীতির বিরুদ্ধেও সিপিএম মতাদর্শ গত ভাবে লড়াই চালাচ্ছে। কিন্তু উদার আর্থিক নীতির কুপ্রভাব এ রাজ্যেও পড়েছে। বিজনবাবুর মতে, ‘বুর্জোয়া সংস্কৃতির’ প্রভাব সিপিএম-এর কিছু কর্মীর উপরেও পড়েছে। তিনি বলেন, সিপিএমের সাংগঠনিক এবং মতাদর্শগত যে দুর্বলতা রয়েছে, তাকে দূর করে দলের রাজনৈতিক আন্দোলনের তাৎপর্য আরও বেশি সংখ্যক রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকে আলোচিত হয়েছে।
এ দিকে, রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফলে কংগ্রেস-জোটের বিপর্যয় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায় বর্মন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ভোটের ফলাফল রাজ্যবাসীর আসল রায় নয়। রাজ্যের অধিকাংশ মানুষের দারিদ্য এবং নিরক্ষতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে এ বারও সিপিএম ক্ষমতায় এসেছে।” তাঁর অভিযোগ, প্রশাসনের একাংশ ভোটের সময়ে শাসক দলের হয়ে কাজ করেছে। ভোটার তালিকা খানিকটা সংশোধিত হলেও পুরোমাত্রায় করা যায়নি। তা ছাড়া তফশিল জাতি-উপজাতি, ওবিসি এবং সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় গ্রামীণ ব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মাধ্যমে আর্থিক কিছু সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, সাব্রুম, মনু, জোলাইবাড়ি, রাজনগর, খোয়াই-সহ মোট ২০টি আসনের ফলাফল ত্রুটিপূর্ণ ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে প্রভাবিত করা হয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন। নগদ অর্থ, বিভিন্ন সামগ্রী বিলির পাশাপাশি, রাজনৈতিক হুমকির মাধ্যমেই সিপিএম ৫২ শতাংশ ভোট সংগ্রহ করে ক্ষমতায় এসেছে বলে মন্তব্য করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনের পরেও শাসক দল সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। |
|
|
|
|
|