|
|
|
|
মাদক পাচারের করিডর হয়ে উঠছে বরাক উপত্যকা |
উত্তম সাহা • শিলচর |
বরাক উপত্যকাকে করিডর করে কোটি কোটি টাকার ড্রাগস বিদেশে পাচার হচ্ছে। এর মধ্যে দিল্লি, হরিয়ানা-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে কফ সিরাপ যায় করিমগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশে। মাদকজাতীয় ট্যাবলেট পৌঁছয় কাছাড়, মিজোরাম হয়ে মায়ানমার এবং সেখান থেকে সবশেষে চিনে। কখনও আবার কাছাড়-মণিপুর-মায়ানমার রুটও ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক ড্রাগ চক্র। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংগঠনের লাগাতর অভিযানের পর এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে বিএসএফ।
গত ৮ মার্চ করিমগঞ্জগামী ট্রাক থেকে ৪৫ কোটি টাকার মাদকজাতীয় ট্যাবলেট উদ্ধারের পর বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে আরও ১৬ কোটি ১৫ লক্ষ টাকার ট্যাবলেট। সম্প্রতি একই ভাবে দিল্লি থেকে আসে ওই মাদক সামগ্রী। বারো চাকার গাড়িটিতে ছিল মোটরগাড়ির যন্ত্রাংশ, জুতো, কাপ-প্লেট, খেলনা, স্টেশনারি সামগ্রী ইত্যাদি। চল্লিশ ঘণ্টারও বেশি সময় কাছাড় জেলার ধলাই চেকগেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে রাজ্য সরকারের কর বিভাগের কর্তাদের সন্দেহ হয়। গাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে কাপ-প্লেট এবং জুতোর কার্টুন থেকে ৬৬৩ কিলোগ্রাম মাদক-ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
সে সময়ই বিএসএফ কর্তারা এসে জানান, তারা অনেক দূর থেকে গাড়িটির ওপর নজরদারি করছিলেন। সঙ্গে রয়েছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো এবং কাস্টমস দফতরের অফিসাররাও। তারা মহম্মদ মবিন এবং মুজিবুর রহমান নামে গাড়ির দুই চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে যান। চালকদের দাবি, দিল্লির একটি ক্যুরিয়ার সার্ভিস এজেন্সি মালপত্র বোঝাই করে দিয়েছে। এর মধ্যে কী কী আছে, তা তাদের পক্ষে দেখা সম্ভব হয়নি।
অন্য দিকে, মার্চের শেষ দিকে করিমগঞ্জ শহরে ঢোকার মুখে একটি গাড়ি থেকে ১৮ কার্টুন কফ সিরাপ বাজেয়াপ্ত করে বিএসএফ। আগাম খবর পেয়ে তারা গাড়িটিতে তল্লাশি চালায়। বাজেয়াপ্ত ওষুধের মূল্য ৭২ হাজার টাকা। আটকে রাখা হয়েছে গাড়ি এবং তার চালক দুলাল শব্দকরকেও।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসএফ-র এক কর্তা বলেন, মাদকজাতীয় সামগ্রী হিসেবে কফ সিরাপের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। তাঁরা সীমান্তে কড়া প্রহরা দিলেও ফাঁকফোকড় গলে কিছুটা ও দেশে ঢুকে পড়ে। এর বাজার মূল্য বেশি নয়। কিন্তু মাদক-ট্যাবলেট পরিবহণে সুবিধে বলে, কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য চলছে। একে আটকাতে গেলে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সংস্থাগুলির সম্মিলিত রণকৌশল তৈরি জরুরি।
এ ক্ষেত্রে বিএসএফ-এর যে বিশেষ ভূমিকা নেই তা-ও তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর কথায়, ট্যাবলেট ভারত-মায়ানমার হয়ে বিদেশে পাচার হয়। সে সীমান্ত বিএসএফ নয়, পাহারা দেয় আসাম রাইফেলস। |
|
|
|
|
|