|
|
|
|
ভুলতে বসা বাঙালিয়ানা ফেরাতে তৎপর প্রবাসীরা |
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায় • রাঁচি |
প্রণামের পরম্পরা অনেকটাই কমে গিয়েছে এই যুগে। গুরুজনদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করার রীতি প্রায় হারিয়ে যাওয়ার পথে। হাতে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময়টাই এখন অনেক বেশি প্রচলিত। কিন্তু রাঁচির বাঙালি তরুণ প্রজন্ম এ বার সেই পুরনো রীতি-রেওয়াজকে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে। বাংলার ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি নিয়ে প্রচার করতে রাঁচিতে বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের চেষ্টায় তৈরি করা হয়েছে বেঙ্গলি যুব মঞ্চ।
নামে যুব মঞ্চ হলেও আসলে রাঁচির সব ধরনের, সব পেশার বাঙালিদেরই এই সংগঠনের সঙ্গে পরোক্ষে যুক্ত করা হয়েছে। তবে সামনে থেকে আসল কাজটা
করবেন বাঙালি যুবারাই। সংগঠনের পক্ষ থেকে সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কাজও পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের উপদেষ্টা এবং সদস্যরা।
ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক তথা রাঁচির বাঙালি নেতা সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের কথায়, “পায়ে হাত দিয়ে প্রণামের চল অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো বাঙালিদের মধ্যেও কমে যাচ্ছে। এ ছাড়াও আরও অনেক ধরনের রীতি-রেওয়াজ বাঙালি ঘরে এক সময় প্রচলিত ছিল। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা তা জানেই না। যুব মঞ্চের সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যেন প্রকাশ্যেই এই রীতি-রেওয়াজগুলি মানেন, পালন করেন। তাতে তাঁদের দেখে অন্যরাও শিখবেন।”
সমগ্র ঝাড়খণ্ডে বিয়াল্লিশ শতাংশ মানুষ বাঙালি। সেই প্রসঙ্গ টেনে সংগঠনের উপদেষ্টা তথা শান্তিনিকেতনের কলা ভবনের প্রাক্তন ছাত্র, শিল্পী হরেন ঠাকুর বলেন, “কয়েক বছর আগে পর্যন্ত বাঙালিদের বাড়ি জোর করে দখল করে নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনেও এমন প্রয়াস চলবে বলেই আমাদের আশঙ্কা। রাজভাষার স্বীকৃতি পাওয়া সত্ত্বেও সরকারি স্তরে বাংলা ভাষার গুরুত্ব নেই। যদি এর প্রতিবাদ করতে কেউ পারে তবে তা যুব সমাজই পারবে।” সাহিত্যিক মহুয়া মাজির কথায়, “নতুন প্রজন্ম তখনই প্রতিবাদ করতে পারবে যখন তাঁরা নিজেরা নিজেদের বাঙালি বলে ভাববে, ভাবতে গর্ব বোধ করবে। তাই আগে যুব মঞ্চের সদস্যদের বাঙালি রীতি-রেওয়াজের সঙ্গে পরিচিত হওয়াটা জরুরি। তবেই তাঁরা নতুন প্রজন্মের বঙ্গ সন্তানদের নিজেদের কথা বোঝাতে পারবেন।”
বাঙালিদের একত্রিত করার জন্যই এক সময়ে রাঁচিতে চালু হয়েছিল বাংলা মেলা। যে মেলার সঙ্গে রাঁচির বাঙালিদের এখনও কার্যত নাড়ির টান। এ বার নতুন প্রজন্মের বাঙালিদের একজোট করতে গঠন করা হল যুব মঞ্চ। যে সংগঠন দুস্থদের মধ্যেও কাজ করবে। গরিব মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা, দুস্থ ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া এবং সঙ্গতিহীন মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থার মতো বিভিন্ন কাজ তাঁরা করবেন বলে সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে। |
|
|
 |
|
|