|
|
|
|
ক্যাবে-র বৈঠকে ইঙ্গিত রাজুর |
ফিরতে পারে পাশ-ফেল, রিপোর্ট পেলেই সিদ্ধান্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
পড়ুয়াদের উপরে চাপ কমাতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল ব্যবস্থা রদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রাক্তন মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী কপিল সিব্বল। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল নানা মহল থেকে। তারই জেরে প্রাক্তন মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিলেন বর্তমান মন্ত্রী এম এম পল্লম রাজু।
বিভিন্ন রাজ্য থেকেই অভিযোগ আসছিল, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার জেরে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পড়াশোনায় অনাগ্রহ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় কংগ্রেস শাসিত হরিয়ানার শিক্ষামন্ত্রী গীতা ভুক্ষল-এর নেতৃত্বাধীন একটি কমিটিকে। আজ দিল্লিতে সেন্ট্রাল অ্যাডভাইসরি বোর্ড অফ এডুকেশন বা ক্যাবে-র বৈঠকে কমিটি প্রধান-সহ বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীরা পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার দাবিতে সরব হন।
গত ৩১ মার্চ শিক্ষার অধিকার আইন রূপায়ণের তিন বছর সময়সীমা শেষ হয়েছে। রাজ্যগুলির বক্তব্য, তিন বছরের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ওই আইন মেনে পাশ-ফেল তুলে দেওয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরীক্ষা ব্যবস্থাটা কার্যত প্রহসনে পরিণত হয়েছে। পড়ুয়াদের মধ্যে ভাল ফল করার প্রবণতা হারিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। কেবল তা-ই নয়, বিনা আয়াসে উপরের ক্লাসে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকায় বাড়ছে অনুপস্থিতির হার।
মন্ত্রক জানিয়েছে, চলতি মাসেই ভুক্ষল কমিটির রিপোর্ট তাদের কাছে জমা পড়ার কথা। কিন্তু তার আগেই আজ ক্যাবের বৈঠকে ভুক্ষল সরাসরি পল্লম রাজুকে জানান, “পড়াশোনার প্রতি ছাত্রছাত্রীদের যে আন্তরিকতা থাকা প্রয়োজন, পাশ-ফেল না থাকায় সেটাই হারিয়ে গিয়েছে। মুড়ি-মিছরি এক দর হওয়ায় মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের অনেকেও পড়াশোনার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলছে বলে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে।” ভুক্ষলের ওই যুক্তি কার্যত মেনে নেন পল্লম রাজুও।
কমিটির অধিকাংশ সদস্যের মত, পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হোক। ওই দু’টি ক্লাসে পরীক্ষায় পাশ করলে তবেই উপরের ক্লাসে উঠুক ছাত্রছাত্রীরা। এর জন্য প্রয়োজনে শিক্ষার অধিকার আইনেও পরিবর্তনের জন্য সওয়াল করেন একাধিক সদস্য। ফলে সিব্বলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেন পল্লম রাজু। শুধু বিরোধীরাই নয়, যে ভাবে কংগ্রেসশাসিত রাজ্যগুলিও সরব হয়েছেন, তাতে আগামী দিনে পাশ-ফেলের বর্তমান নিয়ম পরিবর্তনেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে মন্ত্রকের একাংশ। পল্লম রাজু বলেন, “বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ এসেছে, ওই নিয়মের ফলে ছেলেমেয়েরা পড়াশুনো করছে না। স্কুলগুলিতে অনুপস্থিতির হার বেড়ে গিয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে মানবসম্পদ মন্ত্রকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ছাত্রছাত্রীদের উপর থেকে পড়ার বোঝা লাঘব ও পরীক্ষা ভীতি কাটাতে তৎপর হন কপিল সিব্বল। শিক্ষার অধিকার আইনে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হয়েছিল আগেই। কিন্তু কপিল আরও এক ধাপ এগিয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত একই ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নেন। এমনকী, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন-র সব স্কুলে মাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষাও ঐচ্ছিক করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কপিলের ওই সিদ্ধান্ত কার্যত শিক্ষাব্যবস্থার ভিতটাই নড়িয়ে দিয়েছে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা। |
|
|
|
|
|