|
|
|
|
প্রধানমন্ত্রী কে, ভোটের পরে ঠিক করবে কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? রাহুল গাঁধী, নাকি তৃতীয় বারের মতো এই পদের দায়িত্ব নেবেন মনমোহন সিংহই? এখন প্রশ্ন এটাই।
রাজনীতির অলিন্দে গুঞ্জরিত এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের তরফে আজ, মঙ্গলবার বুঝিয়ে দেওয়া হল, ভবিষ্যতের জন্য সব বিকল্পই এখন থেকে খুলে রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে দল। দেশের প্রধানমন্ত্রী পদ-প্রার্থীর প্রশ্নে বিজেপি জোটে যখন টানাপোড়েন চলছে, তখন কংগ্রেসের মধ্যে সেই বিতর্ক সম্প্রতি উস্কে দিয়েছিলেন দলেরই নেতা দ্বিগ্বিজয় সিংহ। রাহুল-ঘনিষ্ঠ এই নেতা বলেন, গত ৯ বছরের ইউপিএ শাসনে যে ভাবে ক্ষমতার দুটি কেন্দ্র ছিল, তা খুব একটা কার্যকরী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। ভবিষ্যতে এই মডেল না থাকলেই ভাল। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতা বলতে চেয়েছেন, ফের কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে রাহুল গাঁধীরই প্রধানমন্ত্রী
হওয়া উচিত।
কিন্তু সেই বিতর্কেই আজ জল ঢেলে দিতে সচেষ্ট হল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। দলের প্রধান মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদী বলেন, “গত ৯ বছরে সনিয়া গাঁধী ও মনমোহন সিংহ যে ভাবে সমন্বয় করে চলেছেন তার দৃষ্টান্ত বিরল। দ্বৈত ক্ষমতার এই মডেল একটা সফল ব্যবস্থা। ভবিষ্যতেও এ ধরনের ব্যবস্থা অনুসরণ করা যেতে পারে।” তবে জনার্দন এ-ও জানিয়ে দেন, এই মুহূর্তে মনমোহন সিংহ দেশের প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনিই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। তার পর কংগ্রেস জয়ী হলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, দল তখন সিদ্ধান্ত নেবে। মনে করা হচ্ছে, এ কথা বলে ভবিষ্যতের সব সম্ভাবনার দরজা খোলা রাখতে চাইলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কারণ, বর্তমানের সনিয়া-মনমোহন দ্বৈত ক্ষমতার কেন্দ্রের মডেল ভবিষ্যতেও অনুসরণ করার প্রস্তাবের একটা অর্থ হতে পারে তৃতীয় বারের জন্য কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন মনমোহন। আবার এ-ও হতে পারে, সনিয়ার মতোই দলের দায়িত্বে থেকে অন্য কারওকে প্রধানমন্ত্রী করতে চাইবেন রাহুল। কংগ্রেসের কিছু নেতার কথায়, শরিকদের ওপর সরকারকে খুব বেশি নির্ভরশীল হতে হলে ফের মনমোহনই ভাল। সেই সম্ভাবনা খোলা রাখার পাশাপাশি জনার্দন এ কথাও বলেন, প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা কেবল ভোটের পরই কংগ্রেস স্থির করবে। অর্থাৎ রাহুলের রাস্তাও খোলা রইল।
কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, দিগ্বিজয় যে ভাবে দ্বৈত ক্ষমতার কেন্দ্র নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন, তার পর দলের তরফে একটা স্পষ্ট অবস্থান ঘোষণার দরকার ছিল। আজ জনার্দনকে দিয়ে সেটাই করানো হয়েছে। কারণ, এখনও প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন মনমোহন সিংহ। দ্বিগ্বিজয়ের মন্তব্যে তাঁর প্রতি অনাস্থাও
প্রকাশ পাচ্ছে। এর সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন বিরোধীরা।
রাজনীতিকদের মতে, গোটা ঘটনার মধ্য দিয়ে আর একটি বিষয়ও স্পষ্ট হচ্ছে। তা হল, নেতৃত্ব নিয়ে বিজেপি-র মতো প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব না চললেও কংগ্রেসের মধ্যেও যে তলে তলে টানাপোড়েন রয়েছে, জনার্দনের ব্যাখ্যায় তা স্পষ্ট হয়ে গেল। জনার্দনকে দিয়ে বিবৃতি দিইয়ে সনিয়া আজ সেই টানাপোড়েনটাই বন্ধ করতে চেয়েছেন। সেই সঙ্গে বোঝাতে চেয়েছে লোকসভা ভোটের পরই তিনি হাতের তাস খুলবেন। |
|
|
|
|
|