আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও যে কালীঘাট মন্দিরের হাল এতটুকু বদলায়নি, আরও একটি জনস্বার্থ মামলা ফের তা দেখিয়ে দিল।
মঙ্গলবার কালীঘাট মন্দির নিয়ে ওই জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময়ে প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র বিগ্রহের গায়ে দূর থেকে মালা, ফুল, মিষ্টি ছোড়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কেন্দ্রীয় পর্যটন দফতর কালীঘাট মন্দিরের সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য ৫ কোটি টাকা দিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে এক কোটি টাকা। প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা পুরসভাকে একটি রিপোর্ট দিয়ে কোন খাতে কত খরচ হয়েছে এবং পরবর্তী পরিকল্পনার কথা জানাতে বলেন।
গত দশ বছরের বেশি সময় ধরে কলকাতা হাইকোর্ট কালীঘাট মন্দিরের পাণ্ডা, সেবায়েত, পালাদারদের অনৈতিক কাজ, পরিচ্ছন্নতা রক্ষা, ভক্তসহায়ক পরিবেশ তৈরি, আদিগঙ্গা সংস্কার ইত্যাদি নিয়ে ৪০টিরও বেশি নির্দেশ বা রায় দিয়েছে। এর মধ্যে সাত জন প্রধান বিচারপতি এসেছেন। কিন্তু কালীঘাট বদলায়নি। অথচ এ শহরেই দক্ষিণেশ্বর ভবতারিণী মন্দির পরিচ্ছন্ন, ভক্তসহায়ক, পান্ডা, সেবায়েত, পালাদারদের অত্যাচার থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হিসেবে দেশের প্রথম ১০টি মন্দিরের তালিকায় স্থান পেয়েছে। |
অচলাবস্থা
হাইকোর্টের পরপর নির্দেশই সার, কালীঘাট আছে কালীঘাটেই। |
হাইকোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র কলকাতায় আসার পরে বেশ কয়েক বার কখনও একা, কখনও পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কালীঘাট মন্দিরে গিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন পক্ষের কাছে কালীঘাট মন্দিরকে আদর্শ মন্দির হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পরামর্শ চেয়েছেন। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অশোককুমার মাথুর, বিকাশ শ্রীধর শিরপুরকর, এস এস নিজ্জর ও জে এন পটেলও এমন অনেক সুচিন্তিত পরামর্শ নিয়েছিলেন। তাঁরাও বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু কোনওটিই কার্যকর করা যায়নি।
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন। তিনি নির্দেশ দেন, কোনও ভিআইপিও গর্ভগৃহে ঢুকতে পারবেন না। মন্দির কমিটির সম্পাদক গোপাল মুখোপাধ্যায় ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টকে ফের শুনানি করতে বলে। সেই শুনানি শুরু হয়নি। গর্ভগৃহে প্রবেশ যথারীতি চলছে। বদলায়নি কিছুই। কিন্তু প্রায় প্রতিমাসে অন্তত দু’বার কালীঘাট মন্দির নিয়ে জনস্বার্থের মামলা চলছে। |