বাবার ডাক শুনে বাড়ির চিলেকোঠার উপরের ছাদে উঠতে গিয়েছিল বছর এগারোর ঈশিকা। সিঁড়ি না-থাকায় টুলে চেপে উপরে উঠছিল সে। কিন্তু টাল সামলাতে না পেরে পাঁচ তলার ছাদ থেকে আচমকাই নীচে পড়ে যায়। মেয়েকে চোখের সামনে ওই ভাবে পড়ে যেতে দেখে তাকে বাঁচাতে গিয়ে নীচে পড়ে যান ঈশিকার বাবাও। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মৃত্যু হয় ঈশিকারও।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ এই ঘটনা ঘটে পোস্তা থানা এলাকার কলাকার স্ট্রিটে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম অমিত হরিতবাল (৪০) এবং ঈশিকা হরিতবাল (১১)। পুলিশ সূত্রের খবর, কলাকার স্ট্রিটের ওই বাড়িটির চারতলার চিলেকোঠার ঘরে স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকতেন অমিতবাবু। তাঁর প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এ দিন নিজের ঘরে পড়ছিল ঈশিকা।
|
কলাকার স্ট্রিটের সেই বাড়ি।—নিজস্ব চিত্র |
চিলেকোঠার ঘরের উপরের ছাদে কাজ করছিলেন অমিতবাবু। কাজ করতে করতে মেয়েকে ডেকে পাঠান তিনি। সিঁড়ি না থাকায় টুল দিয়ে উপরের ছাদে ওঠে ঈশিকা। তার পরে সেখান থেকে আচমকাই পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে পড়ে যান অমিতবাবুও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাদ থেকে প্রথমে একটি ঠেলাগাড়ির উপরে পড়ে ঈশিকা। সেখান থেকে গড়িয়ে রাস্তায়। আর অমিতবাবু উপর থেকে সরাসরি ঈশিকার গায়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঈশিকাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছু পরে তার মৃত্যু হয়।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কলাকার স্ট্রিটের বাড়িটির সামনে প্রচুর লোক ভিড় করেছেন। রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা রক্তের দাগ ঘিরে রেখেছে পুলিশ। অমিতবাবুর প্রতিবেশীরা জানান, ঘটনার পরেই ঈশিকার তিন ভাইকে তাদের দাদুর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বামী-মেয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অমিতবাবুর স্ত্রী রিনাদেবী। তিনি ঘটনা নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পাঁচতলা থেকে পড়ে যাওয়ার ফলে ঈশিকার মুখ ও মাথায় জোর আঘাত লেগেছিল। যদিও অমিতবাবুর দেহে তেমন বড় কোনও আঘাত মেলেনি বলে হাসপাতালের দাবি। চিকিৎসকদের অনুমান, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয়েছে অমিতবাবুর। |