পরিকাঠামো উন্নতি-সহ নানা দাবিতে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত জেলা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের আধিকারিককে আটকে রাখলেন আবাসিক স্কুলের অভিভাবক ও আদিবাসী গাঁওতার সদস্যরা। অবশ্য বিক্ষোভকারীরা রাতে রান্না করে ওই আধিকারিকের খাওয়ার ব্যবস্থা করেন।
অভিযোগ, বোলপুরের একলব্য আবাসিক স্কুলে আজ বুধবার থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নেই। তাই অবিলম্বে পরিকাঠামোর উন্নতির দাবিতে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বোলপুরের কাঁকুটিয়ায় ওই একলব্য স্কুলে অবস্থান-বিক্ষোভ চলে। সেই সঙ্গে আলোচনাও হয়। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় স্কুলে আসেন বোলপুরের আইসি দেবকুমার রায়।
পুলিশ ও স্থানীয় খবর, এই শিক্ষাবর্ষে আবাসিক স্কুলটি নতুন চালু হয়। আপাতত ষষ্ঠ ও সপ্তম—এই দু’টি শ্রেণিতে পড়ানো হবে। জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে মোট ৯০ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে। ওই সব পড়ুয়াদের নিয়ে মঙ্গলবার অভিভাবকেরা স্কুলে আসেন। |
নানা দাবিতে পোস্টার পড়েছে একলব্য স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র। |
সাঁইথিয়ার মালতি টুডু, পাড়ুইয়ের চরণ মাড্ডি, লাভপুরের মঞ্জু হেমব্রমের দাবি, “সকালে স্কুলে আসতেই নানা অব্যবস্থা চোখে পড়ে। বিদ্যুৎ নেই। পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকলেও ভাল নয়। এ ছাড়াও স্কুলে থাকার জন্য সর্বনিম্ন যে পরিকাঠামো দরকার তাও নেই। এত ছোট ছোট বাচ্চাদের এখানে ফেলে যেতে পারি না।” জেলা আদিবাসী গাঁওতার সম্পাদক রবীন সোরেন বলেন, “স্কুলের সর্বনিম্ন পরিকাঠামোর দাবিতে আমরা বারে বারে সরব হয়েছি। স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন পর্যন্ত দফায় দফায় চিঠি পাঠিয়েছি। কোনও সদুত্তর মেলেনি।”
স্কুলে দিয়ে দেখা যায়, বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের আধিকারিক (ইনস্পেক্টর, হেডকোয়াটার) দীপককুমার দাসকে অভিভাবকেরা আটকে রেখেছেন। আইসির নেতৃত্বে পুলিশ রয়েছে। দফায় দফায় আলোচনা চলছে। তারই মাঝে অস্থায়ী বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে স্কুলে একটি ট্রান্সফর্মার বসানো হয়। এ ছাড়াও দরজা-জানলা বসলেও থাকার জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নেই। পাকা রাস্তার রাস্তা পাশে স্কুল, অথচ পাঁচিল তৈরি হয়নি। দীপকবাবু বলেন, “সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ভর্তি সংক্রান্ত ও পড়ুয়াদের সুবিধা, অসুবিধা দেখার জন্য স্কুলে এসেছি। তাঁরা যে সব দাবি করছেন তা সমাধান করতে পারি না। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হবে তাঁদের দাবির বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। শুক্রবারের মধ্যে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র পৌঁছে যাবে।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “পরিকাঠামোয় কী কী ঘাটতি আছে, তা দেখে শীঘ্রই মেটানো হবে।” |