আর ক’দিন পরেই শুরু হবে ‘বর্ধমানের গঙ্গাসাগর’ মেলা, অর্থাৎ কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের গোপীনাথ মেলা। প্রতিবছরই বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক লক্ষ লোক মেলায় আসেন। এবার তাই আগে থেকেই মেলায় আসা দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য সরাসরি সরকারি সাহায্য চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটির, বস্ত্র ও ভূমি দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। চিঠিতে মেলা চত্বরে পানীয় জল, শৌচাগার, বিদ্যুতের ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। সোমবার এই চিঠি পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে মহাকরণ সূত্রে জানা গিয়েছে। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় আবার গোপীনাথ মন্দিরকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন।
আগামী শনিবার থেকে শুরু হতে চলেছে এই গোপীনাথ মেলা। ভাগীরথীর তীরে অগ্রদ্বীপ গ্রামের ভিতর গোপীনাথ মন্দিরকে ঘিরে এই মেলা বসে। তিন দিনের এই মেলাকে ঘিরে প্রতি বছরই সাধু-সন্ন্যাসীদের ভিড় জমে যায়। স্বপনবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস চৈতন্যদেব নীলাচলে যাওয়ার সময় এবং আরও কয়েকবার অগ্রদ্বীপে এসেছিলেন। শোনা যায়, প্রিয় শিষ্য গোবিন্দ ঘোষের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানেও তিনি উপস্থিত ছিলেন এবং পুত্র হিসেবে গোবিন্দ ঘোষের শ্রাদ্ধও করেছিলেন। স্বপনবাবুর দাবি, রাজ্যের অনেক বহুল প্রচারিত মেলার সমতুল্য এই মেলা। অথচ এর কপালে ঔদাসীন্য ছাড়া আর কিছুই জোটেনি বলে তাঁর অভিযোগ। স্বপনবাবু বলেন, “কয়েক লক্ষ মানুষকে সামলানোর জন্য বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে আসে। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। তাই আমি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়েছি।”
অগ্রদ্বীপ যেহেতু ভাগীরথীর পূর্ব পাড়ে (নদিয়ার দিকে), ফলে কাটোয়া থেকে মেলায় যেতে হলে ভাগীরথী পেরিয়ে যেতে হয়। মেলা চলাকালীন যথেষ্ট নৌকা এবং ভাগীরথীর পাড়ে উপযুক্ত আলোর ব্যবস্থা করার জন্যও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছেন তিনি। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মেলায় প্রচুর মানুষ আসেন। একা অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েত বা কোনও মেলা কমিটির পক্ষে সুষ্ঠু ভাবে মেলা পরিচালনা করা খুবই কঠিন। তাই পর্যটন দফতর মেলার দায়িত্ব নিক।” |