দানবাবার মেলায় দান দুঃস্থদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
সম্প্রতি শেষ হল কাঁকসার পানাগড়ের দানবাবার মেলা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ছ’দশকেরও বেশি সময় ধরে হয়ে আসা এই মেলায় প্রতি বছরই প্রচুর লোক সমাগম হয়। ধর্মভেদ ভুলে পানাগড়ের মানুষেরা মহানন্দে মেতে ওঠেন এই উৎসবে।
স্থানীয় প্রবীণেরা জানান, বহু বছর আগে সৈয়দ শাহ পাহাড়ি নামে এক ফকির বসবাস শুরু করেছিলেন পানাগড়ে। তাঁর অনেক ধনী ভক্ত ছিলেন। তিনি তাঁদের থেকে দক্ষিণা নিয়ে তা দুঃস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন। এই জন্যই এলাকায় তিনি দানবাবা নামে খ্যাতি পান। বহু হিন্দুও তাঁর ভক্ত ছিলেন। ওই ফকিরের মৃত্যুর পরেই স্থানীয় জমিদার তথা পানাগড়ের বাসিন্দা দেবেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তিন বিঘা জমি দান করেন। সেই জমিতেই গড়ে ওঠে দানবাবার মাজার। এখনও মেলার সময় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দর্শনার্থীরা মাজারে যা দান করেন মেলার শেষদিন তার সবটাই তুলে দেওয়া হয় দুঃস্থদের হাতে। |
মেলা প্রাঙ্গণে পসরা সাজিয়ে বিক্রেতা। পানাগড়ে বিকাশ মশানের তোলা ছবি। |
১৯৬০ সাল নাগাদ মেলার সূচনা হয়। সাত দিন ধরে চলে মেলা। সুষ্ঠু ভাবে মেলা পরিচালনার জন্য গড়া হয় মেলা কমিটিও। সারাদিন ধরে লোক আসাযাওয়া থাকলেও আর পাঁচটা মেলার মতোই ভিড় বাড়ে সন্ধ্যায়। থাকে হরেক রকম খাবারও। পানাগড়ে প্রায় সারা বছরই জাতীয় সড়কে যানজট লেগে থাকে। মেলার কয়েকটি দিন পুলিশ তাই অতিরিক্ত সতর্ক থাকে। স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক কল্যাণীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দান বাবার মেলা ঘিরে যে সম্প্রীতির বাতাবরণ গড়ে ওঠে তা দেখার মতো।” জামুড়িয়ার বীরকুলটি থেকে আসা শিবকালী মুখোপাধ্যায় কিংবা বীরভূমের সাঁইথিয়ার মহম্মদ আরমানও একই কথা বলেন। |