সিপিএম অফিস ভাঙচুর, পাল্টা হামলার অভিযোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • লাউদোহা |
শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের সহায়িকা পদের কাজ নিয়ে বিবাদের জেরে সিপিএম-তৃণমূলের মধ্যে গোলমাল বাধল লাউদোহায়। পরস্পরের বিরুদ্ধে দলীয় কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ তুলেছে দু’পক্ষই। মঙ্গলবার বিকেলে এই ঘটনা নিয়ে অশান্তি ছড়ায় এলাকায়। পুলিশ জানায়, টহল চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত ইছাপুরের শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে সহায়িকা পদ নিয়ে সিপিএম নেত্রী শিখা কর্মকারের সঙ্গে এক তৃণমূল কর্মী ময়না বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবাদ থেকে। ওই সহায়িকা পদে কাজ করতেন শিখাদেবী। বছর চারেক আগে জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরে তাঁর জায়গায় কাজ করতেন ময়নাদেবী। বছরখানেক আগে শিখাদেবী আবার কাজ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। কিন্তু ময়নাদেবী জানিয়ে দেন, তিনি কাজ ছাড়বেন না। দু’জনের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। মঙ্গলবার বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে বিডিও মণীশ শর্মার দফতরে বৈঠক ছিল। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বৈঠক থেকে বেরিয়ে শিখাদেবী ময়নাদেবীর উপরে চড়াও হন। তিনি ময়নাদেবী ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গালিগালাজ করতে থাকেন। এর পরে সিপিএমের দলীয় অফিসে ঢুকে পড়েন শিখাদেবী। সিপিএমের অভিযোগ, এর পরেই ময়নাদেবীর পক্ষ নিয়ে এক দল তৃণমূল কর্মী সিপিএম অফিসে ঢুকে হামলা ও মারধর শুরু করে। |
|
|
সিপিএম কার্যালয়ে ভাঙচুর। আগুন তৃণমূল কার্যালয়ে।—নিজস্ব চিত্র। |
|
সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, লাউদোহায় সিপিএমের দুর্গাপুর ৬ অঞ্চল কমিটির অফিসে কৃষকসভার বৈঠক চলছিল। সেই সময়ে অতর্কিতে ২০-২৫ জনের একটি দল হামলা চালায়। লোকাল কমিটির সম্পাদক বুধন মণ্ডল বলেন, “সবাই তৃণমূল কর্মী। জানলা, দরজা ভেঙে দেয়, মারধর করে। আমার হাতে চোট লেগেছে। বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা মোটরবাইকও রেহাই পায়নি।” দলের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের দাবি, “এলাকায় সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করতে সম্পূর্ণ বিনা প্ররোচনায় হামলা চালিয়েছে তৃণমূল।”
তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের ব্লক সভাপতি সুজিতবাবু বলেন, “আমরা চাই শিখাদেবী কাজ করুন। কিন্তু ময়নাদেবী বিধবা মহিলা। তাঁরও একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। সে কথা বলাতেই শিখাদেবী রেগে যান। তিনি ময়নাদেবীর উপরে চড়াও হন।” প্রতিবাদে দু’এক জন তৃণমূল কর্মী শুধু সিপিএম অফিসের জানলার কাচ ভেঙে দেন বলে দাবি সুজিতবাবুর।
এই ঘটনার পরপরই প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঝাঁঝড়া কোলিয়ারির সামনের তৃণমূল অফিসে সিপিএম হামলা চালায় বলে অভিযোগ তৃণমূলের। সুজিতবাবু জানান, তাঁদের অফিসের চেয়ার-টেবিল উল্টে দেওয়া হয়। টিভি ফেলে দেওয়া হয় মেঝেতে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় নথিপত্রে। তাঁর অভিযোগ, “সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা প্রাক্তন লোকাল সম্পাদক মহাবীর যোশীর নেতৃত্বে এই হামলা চালিয়েছে। আমরা দ্রুত তাঁকে এবং তাঁর অনুগামীদের গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি।” মহাবীরবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে সিপিএম পরিচালিত দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুব্রত পাল বলেন, “আমাদের দলীয় অফিসে হামলার দোষ ঢাকতে তৃণমূল নিজেরাই কিছু অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়।” পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। |