দুর্ঘটনাকে খুনের চেষ্টা সাজাতে বলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
সিপিএম নেতার বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিল কিশোরী পরিচারিকা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান গৃহকর্তা। সেই সিপিএম নেতাই মেয়েটিকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে খুনের চেষ্টা করেছেন, পুলিশের কাছে এই নালিশ জানাতে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুব তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।
মেয়েটির বাড়ির লোকজন অবশ্য ওই যুব তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেই পুলিশে অভিযোগ করেছেন। এই কাজ করতে পারলে কয়েক হাজার টাকা দেওয়ার প্রলোভনও দেখান তিনি, অভিযোগ মেয়েটির বাবার। অভিযুক্ত নেতা অবশ্য তা মানেননি। তদন্ত শুরু হয়েছে। বর্ধমানের কাঁকসায় এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিপিএম মিছিল করে। তা লক্ষ করে তৃণমূলের লোকজন ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, মিছিল থেকে তাদের এক নেতার গাড়ি ভাঙচুর হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। |
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে বন্দনা।—নিজস্ব চিত্র। |
কাঁকসার গোপালপুরে সিপিএমের শাখা কমিটির সদস্য স্বপন দত্তের বাড়িতে পাঁচ বছর ধরে রয়েছে বছর পনেরোর বন্দনা বাউড়ি। বাড়ি বাঁকুড়ায়। তার বাবা সুখদেব বাউড়ি পেশায় দিনমজুর। পুলিশ জানায়, রবিবার দুপুরে স্বপনবাবুর একতলার ছাদ থেকে পড়ে যায় বন্দনা। দুর্গাপুর হাসপাতালে ভর্তি বন্দনা পুলিশকে জানায়, ভিজে কাপড় মিলতে গিয়ে অসাবধানে পড়ে যায় সে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, চোট গুরুতর নয়। রবিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে পৌঁছন বন্দনার বাবা সুখদেববাবু ও মা আন্নাদেবী।
সুখদেববাবু সোমবার কাঁকসা থানায় অভিযোগ করেন, এলাকার যুব তৃণমূল নেতা কাঞ্চন নায়েক রবিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে আসেন। তিনি তাঁকে পুলিশের কাছে স্বপনবাবুর বিরুদ্ধে মেয়েকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলার অভিযোগ করতে বলেন। এ জন্য টাকা দেওয়ার কথাও বলেন। বন্দনার সঙ্গে দেখা করেও কাঞ্চনবাবু একই প্ররোচনা দেন বলে অভিযোগ। আন্নাদেবী বলেন, “আমার মেয়ে ওই বাড়িতে ভাল আছে। তাই এই ধরনের কথাবার্তা শুনে তাজ্জব হয়ে যাই।”
স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক স্বপনবাবু বলেন, “বন্দনা আমার পরিবারের সদস্য হয়ে উঠেছে।
তাকে ও সুখদেববাবুকে ব্যবহার করে ওই তৃণমূল নেতা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র পাকানোর চেষ্টা করেছেন জেনে আমি স্তম্ভিত। তবে তাঁরা ফাঁদে পা দেননি।” কাঁকসার বাসিন্দা তথা সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “শুধু সিপিএম করেন বলে স্বপনবাবুর বিরুদ্ধে ওই তৃণমূল নেতা এই ঘটনা নিয়ে
নোংরামি করার চেষ্টা করেছেন। এই আচরণ নিন্দনীয়।” কাঞ্চনবাবুর অবশ্য দাবি, “স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে আমি মেয়েটিকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সিপিএম চক্রান্ত করে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছে।” |