হিম্মতওয়ালা
আইপিএল
ত সপ্তাহে রিলিজ করেছে ‘হিম্মতওয়ালা’ সিনেমাটা। আর রিলিজ করা মাত্রই যাকে বলে ধসিয়ে দিয়েছে। গ্রেগ চ্যাপেল ভারতের কোচ থাকাকালীন, উদয় চোপড়া অভিনেতা হয়ে, অর্ণব গোস্বামী অর্ণব গোস্বামী হয়েও বোধহয় এত বড় মাপের বিপর্যয় ঘটাতে পারেননি।
সিনেমাটা আমাদের কতগুলো প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করায়। সিনেমায় হিম্মতওয়ালাটি আসলে কে? নায়ক অজয় দেবগণ, নাকি পরিচালক সাজিদ খান নিজে? সত্যি বলতে কী, এক জন সাচ্চা ‘হিম্মতওয়ালা’-র পক্ষেই এ রকম ভয়ানক একটা ফিল্ম বানানো সম্ভব।
পুরোনো বলিউড সিনেমার ভয়ঙ্কর রিমেক তৈরি করাটাই এখন ইন্ডাস্ট্রির দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বোধহয় একমাত্র সাজিদের মতো এক পরিচালকই পারেন একটা খারাপ বলিউডি সিনেমাকে আরও জঘন্য ভাবে তৈরি করতে। সত্যি সাজিদ, আপনার গুণের তুলনা হয় না।
জ্ঞানীগুণী মাত্রেই বলেন, সাহসিকতা আর বোকামির মধ্যেকার সীমারেখাটা খুবই সূক্ষ্ম। সাজিদ সবাইকে ভুল প্রমাণ করে ছেড়েছেন। তিনি প্রমাণ করে দিলেন রেখাটা সূক্ষ্ম নয়, বরং বেশ চওড়া। ঠিক ওঁর ৩৮ ইঞ্চি চওড়া কোমরের মতোই।
যদিও ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহলে যাঁরা আছেন তাঁরা অন্য কথাই বলছেন। সাজিদের বোন ফারহা নাকি ভাইকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন তাঁর করা আইপিএল বিজ্ঞাপনের চেয়েও একটা বাজে সিনেমা বানিয়ে দেখাতে। আমাদের অনেকের মতোই ফারহাও বোধহয় ভেবেছিলেন যে তাঁর করা ওই হাস্যকর বিজ্ঞাপনগুলোর মতো খারাপ আর কিছু হতেই পারে না। সাজিদ, সেই চ্যালেঞ্জ শুধু নিলেন তাই নয়, ‘হিম্মতওয়ালা’ বানিয়ে ফারহাকে মাঝমাঠে একদম গো-হারান হারিয়ে দিলেন। সত্যি সাজিদ, আপনাকে অভিনন্দন। আপনার কিছুটা কর্কশ ওই ব্যক্তিত্বের আড়ালে একজন ‘উইনার’ লুকিয়ে আছে যে!
এখনও যদি আপনার কৌতূহল থাকে তা হলে বলি বাস্তবে ‘হিম্মতওয়ালা’ তো দর্শকবন্ধু আপনিই! টিকিট কেটে তিন ঘণ্টা হলবন্দি থেকে এই সিনেমাটা দেখার ক্ষমতা রাখেন যে!
‘হিম্মতওয়ালা’ ছবির একটি দৃশ্য
গত বছর আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে এ বছরের আইপিএল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হল কলকাতায়। কেকেআর-এর মালিক শাহরুখ খান পারফর্ম করলেন এবং যথারীতি অনুষ্ঠানের সব আকর্ষণ নিজের দিকেই টেনে রাখলেন। অনুষ্ঠানে ওঁর পারফরম্যান্স দেখে মনে হচ্ছিল মেয়ের বিয়েতে নেচে বাবা যেন বরাতিদের আনন্দ দিচ্ছেন। এ রকম দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না।
জেনিফার লোপেজকে এ বারের মতো আর অনুষ্ঠানে আনা গেল না। কারণ? শাহরুখ খানের মতোই সাঙঘাতিক নাকি তাঁর দাবিদাওয়া! কী আজব ব্যাপার! তবে পিট বুল এসেছিলেন এবং পার্টি মাতিয়ে গেলেন। পুরোপুরি গানের দিক থেকে দেখলে পিট জেনিফারের থেকে হয়তো কিছুটা এগিয়ে আছেন। কিন্তু দর্শকদের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছিল ‘মুন্নি বদনাম হুয়ি’র আইটেম নম্বরে মালাইকা অরোরার বদলে অনুপম খের নাচলে যেমন দেখাবে, জেনিফারের বদলি হিসেবে পিটের উপস্থিতিকেও খানিকটা সে ভাবেই নিয়েছেন তাঁরা। তাই আর যাই হোক, ব্যাপারটাকে ‘হিট’ বলা চলে না।

আইপিএল এসে গেল
এ বছরের আইপিএল তো এসেই গেল। দেখা যাক এ বছর কী কী দেখা যেতে পারে।
এই রইল আমার লিস্ট!
প্রীতি জিন্টাকে দেখতে চাই। ক্রিসমাস আর সান্টা যেমন, তেমনই হল আইপিএল আর প্রীতি’র সম্পর্ক। বছরের এই সময়টাতেই তো দেখতে পাওয়া যায় তাঁকে। যদিও সম্প্রতি ‘ইশক্ ইন প্যারিস’ নামে একটা সিনেমা করলেন তিনি। কেউই তাঁর জন্য কোনও গল্প লিখছিল না। কাজেই প্রীতি নিজেই লিখে ফেললেন সিনেমার গল্পটা। এমনকী প্রযোজনাও করলেন তিনি নিজেই। আর ভাবুন এক বার, ‘হিম্মতওয়ালা’-র মতো ছবি যে দেশে রিলিজ করতে পারে, প্রীতির ছবিটা সেই দেশে কেউ রিলিজই করতে চাইল না!
মন্দের ভাল এটাই যে প্রীতি’র দল ‘কিংস ইলেভেন পঞ্জাব’ অতি বাজে খেললেও, ‘ইশক্ ইন প্যারিস’-এর চেয়ে ভাল কাটবে। তাই প্রীতি কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।
প্রীতি জিন্টা
এ বছর আইপিএল চলাকালীন শাহরুখকে কে সঙ্গ দেয় সেটাও দেখতে চাই!
কিছু বছর আগে কলকাতায় খেলা চলাকালীন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া এসে আমাদের মন ভরিয়ে দিয়েছিলেন। ইউসুফ পাঠানের জঘন্য ব্যাটিং-এর খারাপ মুহূর্তগুলো উনি একাই ভুলিয়ে দিয়েছিলেন আমাদের।
গত বছর সঞ্জয় কপূরের মতো এক অভিনেতা প্রিয়ঙ্কার বদলে এসআরকে’র পাশে জায়গা দখল করেন। কাজেই যা হওয়ার তাই হয়েছিল। ওয়াংখেড়েতে সেই রাতে হতাশার মাত্রা ক্রমাগত বেড়েই যাচ্ছিল। বিশ্বাস করুন, সঞ্জয় কপূর যদি চার ঘণ্টা ধরে আপনার পাশে বসে খেলা দেখেন, আপনার প্রতিক্রিয়াও একই রকম হবে।
এই আইপিএল-এ আরও অনেক কিছুই দেখার আছে। শিল্পা শেঠির স্বামীকে এখনও তাঁর ড্রাইভারের মতো দেখায় কি না, অম্বানী পুত্রদের ওজন কমল কি না, টিমের জন্য এয়ার-টিকিট কিনতে গিয়ে বিজয় মাল্য কী ভাবছেন আর দিল্লি ডেয়ারডেভিলস টিমের সানি গুপ্তা এ বারের ‘মাস্ট উইন’ ম্যাচের মোড় ঘোরাবেন কী ভাবে?
সত্যি তো এটাই যে গত বছরের আইপিএলটাই এযাবৎ কালের সেরা আইপিএল। কী ছিল না সেটাতে! মোদো-মাতালদের ঝগড়া ছিল, ধর্ষণের একটা অভিযোগ ছিল, একটা ড্রাগ চক্র ফেঁসে গিয়েছিল, ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ ছিল। খারাপ আম্পায়ারিং, জঘন্য ফিল্ডিং, বিজয়ী টিমের জন্য সরকারের তরফ থেকে আয়োজিত এক রীতিমতো অস্বস্তিকর উৎসব-অনুষ্ঠানও ছিল। এ রকম জিভে জল আনা ঘটনা আবার ঘটানোটা কিন্তু সত্যিই বেশ কঠিন!
তবে আইপিএল নিয়ে একটা সত্য বোধহয় আমাদের সবারই জানা। যতই নীচে নামুক না কেন, এর থেকেও নীচে নামার ক্ষমতা আইপিএল-এর আছে। একেবারে তলানিতে পৌঁছনোর আগে পর্যন্ত, আইপিএল আমাদের আরও অনেক মনোরঞ্জন করবে। তাই চলুন, আরাম করে বসে সেই দৃশ্য উপভোগ করি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.