মহিলা প্রার্থী ঠিক করতে গিয়ে ঘাম ছুটছে কোচবিহার জেলার প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যে কংগ্রেস ও তৃণমূলের তরফে দলের মহিলা সংগঠনের সম্মেলন করেছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। কিন্তু তার পরেও ২০০৭ পঞ্চায়েত ভোটের তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ বাড়তি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে দলের নেতৃত্বকে। নতুন মুখ তুলে আনার পরিকল্পনা নিয়ে একই সমস্যায় পড়েছেন জেলার বাম নেতারা।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। এ বার সেটা বেড়ে হয়েছে ৫০ শতাংশ। তার উপরে জেলা পরিষদ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত ত্রিস্তর পুনর্বিন্যাসের ফলে আসন সংখ্যাও বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন দলের নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোচবিহার জেলায় কংগ্রেস, তৃণমূল সহ সিপিএম বিরোধী দলের মধ্যে বিভিন্ন আসনে অঘোষিত জোট ছিল। ফলে সংরক্ষিত আসনে প্রার্থীর সমস্যা এড়ানো সহজ হয়। এবার কংগ্রেস ও তৃণমূল দুই শিবিরকে একক ভাবে তালিকা তৈরির কাজে নামতে হয়েছে। ফলে পছন্দের প্রার্থীর সমস্যা দুই শিবিরে ছায়া মেলেছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব তা কবুল করছেন না।
যেমন, দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের সন্ত্রাসের জন্য মহিলা প্রার্থী নিয়ে কিছু সমস্যা হলেও এবার সেই পরিস্থিতি নেই।” তৃণমূলের প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল আহমেদ জানান, এলাকায় জনপ্রিয় মহিলাদের প্রার্থী করা হবে। ওই কাজে সমস্যা এড়াতে ১০ হাজার মহিলা এনে দলের মহিলা সংগঠনের সম্মেলনও করা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, সম্মেলন করা হলেও মহিলা প্রার্থী সব আসনে দেওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সংশয়ের জেলার প্রথম সারির নেতারা।
|
ত্রিস্তর পঞ্চায়েত |
• জেলা পরিষদ আসন ৩৩
• মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ১৬
• পঞ্চায়েত সমিতি আসন ৩৬৬
|
• মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ১৮০
• গ্রাম পঞ্চায়েত আসন ১৯৬৬
• মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৯৪৭ |
|
একই ছবি জেলা কংগ্রেস শিবিরের। দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশ জানান, গত নির্বাচনে জোট থাকায় আসন রফা নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে উৎসাহ ছিল। এ বার মহিলা প্রার্থীর সমস্যা এড়াতে মহিলা সম্মেলন করা হয়। তাও কত আসনে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরীর দাবি, “২০০৩ সালের পরে এ বার দলে মহিলা সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে। আশা করি প্রার্থী ঠিক করতে সমস্যা হবে না।”
স্বস্তি নেই জেলার বাম শিবিরেও। একে রাজ্যে পালা বদলের পরে দলের মহিলা সমিতির সদস্য কমেছে। তার উপরে প্রাক্তন সভাধিপতি চৈতি বর্মন বড়ুয়া সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় অস্বস্তি বেড়েছে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “সংরক্ষিত সব আসনে এলাকায় জনপ্রিয় প্রার্থী খোঁজ করা কঠিন তো বটেই। তবে এ বার বামফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়বে। তাই সমস্যা হবে না।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদে ২৯ ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৫৫টি আসন ছিল। এ বার বেড়ে হয়েছে ৩৩টি এবং ৩৬৬টি। গ্রাম পঞ্চায়েতেও প্রায় তিনশো আসন বেড়েছে। |