বহরমপুর মানসিক হাসপাতাল থেকে প্রায় ১৫ মাস পরে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন নাগপুরের তরুণী প্রতিভা বাডকে। হাসপাতাল থেকে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য সোমবার নাগপুর থেকে বহরমপুরে এসেছিলেন বাবা ভিট্টল জনার্দ্দন বাডকে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি রেল পুলিশ বর্ধমান স্টেশন থেকে প্রতিভাদেবীকে উদ্ধার করে। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁর ঠাঁই হয় বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে। তার পর থেকে তিনি মানসিক হাসপাতালেই রয়েছেন। নাগপুর আনন্দনিকেতন কলেজের আইন বিভাগের ছাত্রী প্রতিভা বলেন, “নাগপুর থেকে দিল্লি যাই চাকরির পরীক্ষা দিতে। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার জন্য দিল্লি স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই ট্রেন ছেড়ে চলে যায়। পরে অন্য একটি ট্রেনে চড়ে বসি। সেই ট্রেনে এসে বর্ধমানে জল খাওয়ার জন্য নামতেই রেল পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যায়।” |
বাবার সঙ্গে। —নিজস্ব চিত্র। |
মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অজয় কুমার চক্রবর্তী বলেন, “ওই তরুণী ‘বাইপোলার ডিসঅর্ডার’ রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ওই ধরণের রোগীরা আচমকা উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং ভাঙচুর করেন। হাসপাতালের চিকিৎসায় তিনি এখন সুস্থ। তবে তাঁর মত পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে প্রায় দেড়শো জন মত সুস্থ আবাসিক হাসপাতালে রয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু বাড়ির লোকজন তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী নন। ওই রোগীদের যাতে পুনর্বাসন দেওয়া যায়, তারও চেষ্টা করছি আমরা।”
এদিকে বাড়ির অমতে চাকরির পরীক্ষা দিতে যাওয়ায় মেয়ের উপরে ক্ষুব্ধ হন বাবা। ফলে হাসপাতালে থাকার সময়ে বাড়ির সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগও করতে চাননি ওই তরুণী। পরে ‘অঞ্জলি’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা কাউন্সেলিং করে বাড়ির ঠিকানা নিয়ে যোগাযোগ করেন নাগপুরে। সংস্থার পক্ষে অদিতি বসু বলেন, “মুম্বাইয়ের ‘অ্যাকশন এইড’ সংস্থার সাহায্য নিয়ে নাগপুরের বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পাই। সেখানে গিয়ে ওই তরুণীর বাবার সঙ্গে কথা বলে মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে রাজি করানো হয়। ওই তরুণীকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সুপার পবিত্র সরকার সাহায্য করেন।” |